পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা পুদিনা পাতার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না তা আজকের আর্টিকেল থেকে এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কিভাবে পুদিনা পাতা খাওয়া যায় কিভাবে খেলে এর গুনাগুন পাওয়া যায় পুদিনা পাতার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সবাই আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
আরো পড়ুন: আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেজ সূচিপত্র : পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

পুদিনা পাতার উপকারিতা 

পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না। খুবই কম সংখ্যক মানুষই আছেন যারা পুদিনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তাই যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি। পুদিনা পাতার অনেক গুনাগুন এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে। যার কারণে এটি আমাদের জন্য অনেক উপকারী। পাতা রান্নার ক্ষেত্রে বলেন বা সুস্বাস্থ্যের জন্য বলেন যেভাবে বলেন না কেন পুদিনা পাতা পুষ্টিগুণে ভরপুর। পুদিনা পাতা রয়েছে অনেক উপকারিতা। 
 
চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক পুদিনা পাতার উপকারিতা গুলো কি কি 

পেটের সমস্যা সমাধান করে: বর্তমান সময়ে দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই পেটের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। আর এই সমস্যার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হলো আমাদের জীবনযাত্রা ধরন এবং আমাদের খাদ্যা অভ্যাস। পেটের সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা ধরুন পরিবর্তন করতে হবে। পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচতে আমরা প্রতিদিন পুদিনা পাতা রস খেতে পারি। 
 
পুদিনা পাতার রস নিয়মিত খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা সহজে দূর হয় এবং বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচতে সাহায্য করেন। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় পুদিনা পাতার রস রাখা।
 
ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে: পুদিনা পাতা ত্বক ভালো রাখতে বেশ উপকারী একটি উপাদান। পুদিনা পাতা ব্যবহারের ফলে ত্বকের ফাঙ্গাস ব্যাকটেরিয়া দূর হয় এমনকি মুখে ব্রণ বা এলার্জির সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। এইজন্য পুদিনা পাতার পেস্ট তৈরি করে নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করলে এর থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। 

পেটের সমস্যা সমাধানে: অনেক সময় দেখা যায় খাবার খাওয়ার পর পেট ব্যথা পেটে জ্বালাপোড়া গ্যাস সৃষ্টি হয়। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে এসব সমস্যা সহজেই দূর হয়ে যায়। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলেন আপনার পাচনতন্ত্র ভালো কাজ করবে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করবে। তাই পেটে সমস্যা দূর করতে নিয়মিত পুদিনা পাতা খাবার অভ্যাস করুন। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: পুদিনা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও প্রধান এবং ভিটামিন সি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে সর্দি-কাশি থেকে নিরাময় পাওয়া যায় এমনকি শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি চাহিদা দও পূরণ হয়। এজন্য নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে শরীরে কোন রোগব্যাধি সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। 

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: পুদিনা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। পুদিনা পাতা একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেক গুণাগুণ রয়েছে। তাই নিয়মিত  পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সহায়তা: যাদের ওজন অনেক বেড়ে গেছে যারা ওজন নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছেন তারা নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারেন। কারণ পুদিনা পাতায় রয়েছেন মেয়েটা বলিজম উপাদান যা শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনারা নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন। 

চুলের যত্নে পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা শুধু যে ত্বকের জন্যই উপকারী তা নয় এটি অনেক রোগের জন্য উপকারী। চুলের যত্নেও পুদিনা পাতা বেশ উপকার করে থাকে। নিয়মিত পুদিনা পাতা চুলে ব্যবহার করলে চুলের বিভিন্ন সমস্যা সহজে দূর হয়ে যায় যেমন চুলের খুশকি চুলের গোড়া শক্ত চুল মজবুত করা। এমনকি পুদিনা পাতা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে থাকে।
 
দাঁতের জন্য উপকারী: পুদিনা পাতা দাঁতের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। পুদিনা পাতায় রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে যার ফলে মুখের দুর্গন্ধ কমে যায় এবং মাড়ির সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাই পুদিনা পাতা রস বা তেল দিয়ে তৈরি পেস্ট দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন সমস্যা থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়। 

পিরিয়ডের ব্যথা দূর করে: অনেক মহিলায় রয়েছেন যাদের পিরিয়ডের সময় অনেক পেটে ব্যথা করে থাকে। এটা অনেকেই জানেন না। পিরিয়ডের সময় পুদিনা পাতা রস খেলে সহজেই ব্যথা কমে যায় এমনকি পেটের জ্বালা পোড়াও ভাবও দূর হয়ে যায়। পুদিনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের যে কোন ব্যথায় সহজে কমে যেতে পারে। 

এলার্জি সমস্যা সমাধানে: পুদিনা পাতা এলার্জি সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পুদিনা পাতায় রমা রিনিক এসিড নামে একটা যৌগ রয়েছে। এই যৌগটি শরীরের হিস্টামিন প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। এতে করে আপনার হাঁচি এবং চুলকানির মত এলার্জির সমস্যা গুলো সহজে দূর করতে পারে। 

বমি বমি ভাব কমাতে: পুদিনা পাতায় অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলোর কারণে পুদিনা পাতা আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। আর এই উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম একটা উপাদান হচ্ছে মেন্থল। এই উপাদানটি মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে পারে। তাই এই উপসর্গটি হালকা সংবেদনশীল, বমি বমি ভাব এবং বমি কমাতে ও সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে: পুদিনা পাতায় রয়েছে বিশেষ সুগন্ধি যার কারণে এটি মুখে দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। অনেকে রয়েছেন যাদের মুখে ব্যথা গলা ব্যথা সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত রস সেবা করলে এ সকল সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাবেন।
 
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পুদিনা পাতা একটা ভেষজ উদ্ভিদ। মানুষের বিভিন্ন মানসিক টেনশনের ফলে অনেকের ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পায় এতে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হয়। আর এই উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আপনারা নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারেন এতে করে মানসিক সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। 

পুদিনা পাতার অপকারিতা 

যে কোন জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতা ও রয়েছেন। তাই কোন জিনিসই প্রয়োজনীয় তুলনায় বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত নয় এতে উপকারের চাইতে অপকার বেশি হতে পারে। ঠিক সেই রকমই একটি উপাদান হচ্ছে পুদিনা পাতা। পুদিনা পাতা খেলে কি কি সমস্যা হয় আজকে আমরা সে সম্পর্কেই জানব। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক পুদিনা পাতার উপকারিতা সমূহ 

  • অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরও বহু গুনে বেড়ে যেতে পারে। এজন্য পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। 
  • পুদিনা পাতা খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। তাই পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণে খেলে আপনার শরীরের রক্তচাপ অনেকটাই কমে যাবে যার ফলে আপনার মাথা ঘোরা শরীর দুর্বলতা বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে। 
  • যাদের গ্যাস ও অম্বলের সমস্যা রয়েছে তারা বেশি পরিমাণে পুদিনা পাতা খেলেন এই সমস্যাগুলো বেশি পরিলক্ষিত হয়। আবার পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণে খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় পুদিনা পাতা খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এজন্য গর্ব অবস্থায় অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খেলে জরায়ু দুর্বল হয়ে যায়। 
  • যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের পুদিনা পাতা না খাওয়াই ভালো কারণ অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খেলে শরীরে এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়। পুদিনা পাতায় এলার্জি মাত্রা কে বহুগুনে বাড়িয়ে দেই। এছাড়াও বেশি পরিমাণে পুদিনা পাতা খেলেন শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়।
  • শিশুদের অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়ালে শিশুদের শ্বাসকষ্ট এমনকি গলা জ্বালাও করতে পারেন। এজন্য শিশুদের অতিরিক্ত পুদিনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণে খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে যায়। বিশেষ করে যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা পুদিনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। 
  • পুদিনা পাতা বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে মুক্ত বর্ধন জালাবাদ এবং ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে এই জন্য বেশি পরিমাণে পুদিনা পাতা খাওয়া যাবে না খেলে সমস্যা হতে পারে।

পুদিনা পাতার পুষ্টি ,ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমূহ

প্রতি ১০০ গ্রাম পুদিনা পাতায় যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো হল
  • ক্যালোরি : ৭০
  • কার্বোহাইড্রেট : ১৪ থেকে ১৫ গ্রাম
  • প্রোটিন : ৩.৭৫ গ্রাম
  • চিনি: ০.২ গ্রাম
  • হ্যাট: ০.৯৪ গ্রাম
  • ফাইবার : আট গ্রাম
  • ভিটামিন এ : ৫৬৯৮ আই ইউ
  • ভিটামিন সি :৩১.৮ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন ই :১.২৪ মিলিগ্রাম 
  • ভিটামিন কে: ২১০০ mcg(DV-2625%)
  • ভিটামিন বি 9: ১০৪ mcg(dv-26%)
  • ক্যালসিয়াম :২৪৩mg
  • ম্যাগনেসিয়াম : ৮০ mg
  • জিংক :১.১১mg
  • পটাশিয়াম : ৫৬৯mg
  • কপার : ০.৩২৯ mg

পুদিনা পাতার পরিচিতি 

পুদিনা পাতা হচ্ছে একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার সতেজ স্বাদ ও বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুনের জন্য গোটা বিশ্বে এর পরিচিতি। পুদিনা পাতা রয়েছে অনেক পুষ্টি গুনাগুন। যার কারণে এটি রান্না পানীয় এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও উপকারিতা জন্য প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। পুদিনা পাতার গাছগুলো সাধারণত কম বর্ধনশীল, কান্ডগুলো বর্গাকার ভেষজ বহুবর্ষজীবী একটি উদ্ভিদ । 

এই গাছের পাতাগুলো সাধারণত ছোট ডিম্বাকৃতির থেকে লেন্স আকৃতির হয়ে থাকে।
পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল ( Mentha  Spicata) . এটি Lamiaceas পরিবারের অন্তর্গত। পুদিনা পাতা কে ইংরেজিতে বলা হয় Mint Leaves. পুদিনা পাতা হচ্ছে পুদিনা গাছের সুগন্ধি ও প্রাণবন্ত সবুজ পাতা।

পুদিনা পাতার জুসের উপকারিতা 

পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। পুদিনা পাতার পুদিনা পাতার উপকারিতার কথা আলোচনা করতে গেলে পুদিনা পাতার জুসের কথা আলোচনা করতে হয়। কারণ পুদিনা পাতার জোর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনারা চাইলে পুদিনা পাতার জোস যে কোন ফলে জুসের সাথে মিশেও খেতে পারেন না। এটা আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হবে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক পুদিনা পাতার জুস খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে 

  • সর্দি কাশি এবং যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত প্রদিনা বাধার জুস খেতে পারেন। এতে করে আপনার শ্বাসকষ্ট এবং সর্দি-কাশি সমস্যা সহজেই নিরাময় হবে।
  • পুদিনা পাতার জুস নিয়মিত খেলে এটি পেটের জন্য অনেক উপকারী। কারণ জুস খেলে পেট ঠান্ডা রাতে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • যারা পেটের মেদ ও শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তারা নিয়মিত প্রতিপাদন জুস খেতে পারেন এতে করে ভালো ফলাফল পেতে পারেন । কেন জানি আমি তো পুদিনা পাতার জুস খেলে খুব সহজেই পেটে চর্বি কমে।
  • পুদিনা পাতায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন সি ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন ই যার ফলে শরীরে কোন রোগ সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। এমনকি এটি খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। 
  • পুদিনা পাতার মধ্যে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরের এলার্জির সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • হ্যাঁ নিয়মিত জুস খেলে এটি আপনার শরীরে যে কোন ধরনের ইনফেকশন সৃষ্টি হতে বাধা দেবে।
  • নিয়মিত পুদিনা পাতা জুস খেলে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে ও সহায়তা করে।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ক্লান্তি ভাব ও দুর্বলতা আসে পুদিনা পাতার জুস নিয়মিত খেলে ক্লান্তি ভাব ও দুর্বলতা সহজেই দূর হয়ে যায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থায় মহিলাদের পুদিনা পাতার জুস খাওয়া উচিত।

চুলের জন্য পুদিনা পাতার উপকারিতা 

পুদিনা পাতার অনেক পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে যার জন্য এটি শুধু ত্বকের জন্যই নয় এটি চুলের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। নিয়মিত পুদিনা পাতা চুলে ব্যবহার করলে চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করা যায়। অনেকেই চুল পড়া নিয়ে অনেক চিন্তিত। এই সমস্যার সমাধান পেতে আপনারা নিয়মিত পুদিনা পাতার পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগিয়ে কিছু সময় রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
সাথে সাথে আপনার মাথাও ঠান্ডা থাকবে।মাথায় বিভিন্ন ধরনের পাঙ্গাস পাঙ্গাস ব্যাকটেরিয়া চুলের খুশকি অনেক সময় মাথা অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া এসব সমস্যা পুদিনা পাতা ব্যবহারের ফলে সহজে নিরাময় হয়ে যায়। পুদিনা পাতার বেস্ট ব্যবহারের ফলে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং মাথায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এমনকি মাথার তেলতেলে ভাব দূর হবে পুদিনা পাতার পেস্ট ব্যবহারের ফলে।
তাই স্বাস্থ্য উজ্জ্বল চুল এবং মাথা ঠান্ডা রাখতে নিয়মিত পুদিনা পাতার বেস্ট পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন না এতে আপনার মাথার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সহজেই সমাধান হয়ে যাবে। 

ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতার ব্যবহার 

ত্বকের যত্নে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে বাজারে পাওয়া যায় এমন সব প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার না করে যদি ঘরোয়া ভাবে ত্বকের যত্ন নিলে ত্বক অনেক সুন্দর হয়। তা না করে প্রসাধনী সামগ্রীর উপর আমরা অনেকেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। যার ফলে ত্বকে দেখা যায় নানা সমস্যা। আর এই জন্য পুদিনা পাতা অনেক উপকারী একটি উপাদান। পুদিনা পাতা ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক অনেক কমল ও মসৃণ হয়ে ওঠে। চলুন তাহলে জেনে নেই ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতার ব্যবহার 

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে: পুদিনা পাতা ব্যবহারের ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, ত্বক হয়ে ওঠে কমল ও মসৃণ। এটি ত্বক আস্টিনজেন্ট এসব এ কাজ করে ভেতর থেকে ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতার প্যাক তৈরি করে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক সুন্দর হয়ে উঠবে এবং এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকের বলি রেখা ও দূর হয়ে যাবে। 

ত্বকের ডার্ক সার্কেল: ত্বকের ডার্ক সাইকেল কমাতেও পুদিনা পাতার রস অনেক উপকারী একটি উপাদান। পুদিনা পাতায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট আর এই উপাদান চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে এর থেকে ভালো ফলাফল পাবেন। 

ব্রণের দাগ দূর করতে: পুদিনা পাতায় অনেক পুষ্টি গুণাগুণ রয়েছে যার কারণে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। পুদিনা পাতা মুখে ব্রনের দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। পুদিনা পাতায় রয়েছে স্যালিসিলিক এসিড এবং ভিটামিন এ যা ত্বকের তেল ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। পুদিনা পাতা ব্যবহারে তেল ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ এ থাকে ফলে ব্রণের দাগ কমে যায়।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

পুদিনা পাতা যেভাবে খাবেন 

পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আর এজন্যই অনেকে পুদিনা পাতার সাথে পরিচিত ও না। তাই অনেকেই আছেন যে পুদিনা পাতা কিভাবে খেতে হয় কেমন করে খেতে হয় এ বিষয়ে। পুদিনা পাতা কিভাবে খেলে এর উপকারিতা পাওয়া যাবে এবং পুদিনা পাতা কিভাবে খেতে হয় সে বিষয়ে জেনে নেই 
  • সকালে খালি পেটে পুদিনা পাতা চিবিয়ে ফেলে এর থেকে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আপনারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পুদিনা পাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
  • পুদিনা পাতা যেকোনো সালাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে কেটে সালাতের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর অনেক টেস্ট লাগে এবং অনেক উপকারও পাওয়া যায়।
  • অনেকে আছেন যারা যে কোন ফলের জুস খেতে পছন্দ করেন তাই আপনারা চাইলে জুসের সঙ্গে মিশেও পুদিনা পাতা খেতে পারেন। এতে করে আপনার জুসের  পুষ্টিগুণ ও বেড়ে যাবে।
  • আপনারা চাইলে পুদিনা পাতা রস করে খেতে পারেন পুদিনা পাতার রস খেলেও এর থেকেও অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় যেটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
  • পুদিনা পাতা শুকিয়ে সংরক্ষণ করেও রাখা যেতে পারে। আর এই পুদিনা পাতার গোড়া রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে আপনার রান্নার স্বাদ ও দ্বিগুণ পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
  • বর্তমান সময়ে অনেক মানুষের রয়েছেন যারা চা খেতে পছন্দ করেন আর এই চায়ের সাথে মিশিয়ে পুদিনা পাতা খেতে পারেন এটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হবে।
  • পুদিনা পাতা খাবার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সতেজ পুদিনা পাতা খাওয়ার জন্য। কেননা শুকনো পুদিনা পাতা চাইতে সতেজ পুদিনা পাতায় পুষ্টি গুণাগুণ অনেক বেশি পাওয়া যায়।

পুদিনা পাতার চা এর উপকারিতা 

পুদিনা পাতা হচ্ছে একটি ভেষজ উদ্ভিদ এবং এর পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে অনেক। এটি আমাদের শরীরের জন্য এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই পুদিনা পাতা যে কোনভাবে খাওয়া হোক না কেন এটি আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। আমরা অনেকেই আছি যারা পুদিনা পাতা চায়ের সাথে খেয়ে থাকি। পুদিনা পাতার চা খেলে শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যথা, সর্দি কাশি, এলার্জি এমনকি শরীরে বিভিন্ন জায়গার ক্ষত নিরাময় করতেও সাহায্য করে।
পুদিনা পাতার চা খেলে সহজে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হয়, ত্বকের বলিরেখা দূর করতেও সাহায্য করে। বর্তমান সময়ের চা পছন্দ করেন না এমন সংখ্যক মানুষ খুব কমই আছেন। আপনারা প্রতিনিয়তই চা খেয়ে থাকেন তাহলে পুদিনা পাতা চা খেতে সমস্যা কোথায় পুদিনা পাতা চা খেলে তো উপকারী পাওয়া যায়। পুদিনা পাতা চা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। 
 
সারাদিন কাজ কর্মে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় এবং শরীরে দুর্বলতাও দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত পুদিনাপাতার চা খেলে শরীরটা সতেজ এবং সবল হয়ে উঠবে। 

পুদিনা পাতার চা তৈরীর পদ্ধতি 

পুদিনা পাতার চা অনেকেই পছন্দ করি এবং অনেকেই খেয়ে থাকি কিন্তু অনেকেই জানিনা কিভাবে তৈরি করতে হয়। তাই যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিলেই পারবেন পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে হয় কিভাবে 
চা বানানোর প্রয়োজনীয় উপাদান: 
  • আট দশটি পুদিনা পাতা 
  • প্রয়োজন মত পানি 
  • অল্প পরিমাণে চা পাতা 
চা বানানোর পদ্ধতি :
  • প্রথমে একটি চুলায় একটা বাতিল বসাতে হবে। 
  • এরপর পাতিলের প্রয়োজনমতো পানি দিতে হবে ।
  • তারপর পানি গরম হয়ে গেলে পুদিনা পাতাগুলো পানিতে দিয়ে দিতে হবে। 
  • এরপর পুদিনা পাতাযুক্ত পানি চার থেকে পাঁচ মিনিট জাল করে নিতে হবে ।
  • এরপর পাতা গুলো নেড়ে দিয়ে এতে অল্প পরিমাণে চা দিয়ে দিতে হবে।
  • এখন সব উপকরণগুলো আবারো একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। 
  • এবার একটি কাপে ছাকনি দিয়ে ছেকে  নিতে হবে। 
তাহলে তৈরি হয়ে গেল পুদিনা পাতার চা।
আরো পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে

জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর সমূহ: পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

১। পুদিনা পাতা মাথায় দিলে কি হয়? 
উত্তর: প্রদিনা পাতা রস এবং শিকড়ের রস মাথার জন্য খুবই উপকারী। পুদিনা পাতা মাসে করে রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় উকুন থাকলে সেগুলো দূর হয়ে যায় এবং মাথা ঠান্ডা থাকে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলে মাথা উকুন মুক্ত হয়ে যাবিএবং মাথা ঠান্ডা থাকবে।
 
২। প্রতিদিন পুদিনা পাতা খেলে কি হয়? 
উত্তর: প্রতিদিন পুদিনা পাতা খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। ফলে বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়াকে  সহায়তা করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পুস্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। 
 
৩।পুদিনা পাতা মুখে দিলে কি হয়? 
উত্তর: পুদিনা পাতা মুখে দিলে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়, মুখে ব্রণ জনিত কোন সমস্যা থাকলে সেটাও দূর হয়ে যায়। ত্বক কমল এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে। এজন্য আপনারা নিয়মিত পুদিনা পাতার পেস্ট মুখে ব্যবহার করতে পারেন। 
 
৪। পুদিনা পাতা ব্যবহারে কি ব্রণের দাগ কমে? 
উত্তর: পুদিনা পাতা রয়েছে স্যালিসিলিক এসিড এবং ভিটামিন এ যা ত্বকের তেল ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। পুদিনা পাতা ব্যবহারের ফলে ত্বকের তেলতেলে ভাব নিয়ন্ত্রণে থাকে তাই মুখে ব্রন নিয়ন্ত্রণ করে ব্রনের দাগ ও দূর করতে সাহায্য করে। 
 
৫। পুদিনা পাতা খেলে কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে? 
উত্তর: পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ভিটামিন ই যার কারণে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। পুদিনা পাতা ব্যবহারে ফলে শরীরে সহজে কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। তাই আপনারা চাইলে নিয়মিত পুদিনা পাতা খেতে পারেন।

মন্তব্য: পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

আজকে আমরা পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পুদিনা পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। পুদিনা পাতা একটি ভেষজ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উদ্ভিদ যার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাই আপনারা এর থেকে উপকারিতা পেতে চাইলে নিয়মিত পুদিনা পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
 
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বেশ উপকৃত হবেন। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর এই এরকম নিত্য নতন আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। চেষ্টা করব প্রতিনিয়ত এরকম নিত্য নতুন আর্টিকেল আপনাদের জন্য পাবলিশ করতে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন রয়েল আইটির সাথেই থাকবেন।









এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url