জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা-গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের উপকারিতা

জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা-গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জলপাইয়ের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
জলপাই এ প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদন রয়েছেন যার কারণে জলপাইয়ের উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের উপকারিতা অনেক। তাই যারা জলপাই সম্পর্কে জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে জলপাইয়ের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

পেজ সূচি পত্র: জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা 

জলপাইয়ের উপকারিতা

জলপাই এ প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার কারণে জলপাইয়ের উপকারিতা অনেক। জলপাই একটি স্বাস্থ্যকর এবং শরীরের জন্য অনেক উপকারী ফল। জলপাইয়ের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীর সুস্থ রাখতে অনেকটাই সহায়ক। চলুন তাহলে জেনে নেই জলপাইয়ের উপকারিতা গুলো কি কি 

আরো পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জলপাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। জলপাই এ প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভিটামিন সি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। তাই নিয়মিত জলপাই খেলে আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং যেকোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য হবে। 

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: জলপাই রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো দেহের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে এবং ক্ষতিকার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে। ফলে সহজেই ক্যান্সার রোগ আক্রমণ করতে পারে না। বিশেষ করে স্তন কলন এবং পাকিস্থলির ক্যান্সার প্রতিরোধে জলপায় অনেক উপকারী। 

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা: জলপাইয়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পরিপাকতন্ত্রের জন্য অনেক উপকারী। ফাইবারের কারণে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। জলপাই খেলে পাকস্থলীর সুস্থতা বজায় থাকে এবং গ্যাস্ট্রিক, আলসার প্রতিরোধ সাহায্য করে থাকে।

ত্বক ও চুলের যত্নে জলপাই: ত্বক ও চুলের জন্য জলপাই বেশ উপকারী। জলপাই এ রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিড জা ত্বক ও চুলের যত্নে খুবই ভালো কাজ করে। জলপাইয়ে থাকা ভিটামিন ই এবং ভিটামিন এ ত্বকের মসৃণতা এবং চুলের গঠনকে মজবুত করে। তাই  চুল ভালো রাখার জন্য নিয়মিত জলপাই খেতে পারেন। 

আয়রনের ঘাটতি পূরণে: জলপাইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এজন্য বলা হয় জলপাইকে আয়রনের উৎস। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অনেক সমস্যা দেখা দেয় বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের আয়রনের সমস্যা অনেক দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গর্ভবতী মহিলাদের আয়রন ট্যাবলেট দিয়ে থাকেন। তাই আপনি যদি জলপাই খেতে পারেন তাহলে আপনার আয়রনের ঘাটতি  অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। 

চোখের যত্নে: জলপাইয়ে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ থাকে। আর ভিটামিন এ চোখের জন্য অনেক উপকারী। তাই আপনারা নিয়মিত জলপাই খেতে পারলে ভিটামিন এ এর চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়ে যাবে ফলে আপনাদের চোখের অনেক উপকার হবে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক: জলপাই হচ্ছে কম ক্যালরিযুক্ত ফল। এটি খেলে শরীরে সহজেই চর্বি জমতে পারে না। জলপাই খেলে খুধা কম লাগে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা ভরা অনুভূত হয় যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন তারা নিয়মিত জলপাই খেতে পারেন। 

স্বাস্থ্যের উন্নতি: জলপাইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্কের কোষের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে থাকে। জলপাই নিয়মিত খেলে শরীরের অনেক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যায় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শরীর অনেক সুস্থ থাকে এবং শরীরের সহজে কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: ডায়াবেটিকস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা একবার হলে সহজেই দূর করা যায় না। এ রোগটি রক্তে শর্করার মাত্রাকে বৃদ্ধি করে। জলপাই থাকা ফাইবার এবং মনসা চড়েটেড ফ্যাট রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধ ও সহায়তা করে।

পিত্ত থলিতে পাথর হওয়া: পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার একটা সাধারণ সমস্যা এটি পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে। জলপাই পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয় এবং পিত্তরসের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখে। পিত্তথলিতে পাথর জমার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

জলপাইয়ের অপকারিতা 

জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতার কথা বলতে গেলে শুধু উপকারিতার কথা বললেই হবে না এর অপকারিতার কথাও বলতে হয়। জলপাইয়ের তেমন কোন উপকারিতা পাওয়া যায় না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সেগুলো সকলে মেনে চলা উচিত। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক জলপাইয়ের অপকারিতা সমূহ কি কি

এলার্জির সমস্যা: কিছু মানুষের এলার্জির সমস্যা রয়েছে যারা জলপাই খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং তাদের শরীরে এলার্জি লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে ত্বক ফুলে যাওয়া, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। 

গ্যাসের সমস্যা: যাদের একটু বেশি গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা জলপাই খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা করতে পারেন এমনকি পেট ফুলে যেতে পারে। তাই যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা জলপাই খাওয়া থেকে সতর্ক থাকবেন। 

কিডনির সমস্যা: জলপাইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছেন তাদের জলপাই না খাওয়াই উচিত। কারণ কিডনির সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের জন্য জলপাইয়ে থাকা পটাশিয়াম অনেক ক্ষতি করতে পারে। তাই কিডনির সমস্যা থাকলে জলপাই খাওয়া উচিত নয়। 

মস্তিষ্কের রোগ: জলপাইয়ে থাকে সেচুরেটেড ফ্যাট যা মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়তা করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত পরিমাণে সে-চুরেটেড ফ্যাট মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে জলপাই খাওয়া উচিত নয়। 

ওষুধের সাথে মিথস্ক্রিয়া : ওষুধের সঙ্গে জলপাই খাওয়া উচিত নয়। ওষুধের সঙ্গে জলপাই খেলে অনেক ক্ষতি হতে পারে। যেমন রক্ত পাতলা করার ওষুধের সঙ্গে জলপাই খেলে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ওষুধের সাথে জলপাই খাওয়া উচিত নয়। 

জলপাইয়ের পুষ্টিগণ 

জলপাই ফলের পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক যা প্রতিটি ফলপ্রেমী মানুষেরই জানা অনেক জরুরী। কেননা নানান ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এই জলপাই ফল। জলপাই একটা পরিচিত ফল। জলপাই ফল অনেকে পছন্দ করেন আবার অনেকে করেন না। জলপা্‌ই প্রত্যেকেরই খাওয়া উচিত কেননা জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক জলপাইয়ের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান সমূহ 

প্রতি ১০০ গ্রাম জলপাইয়ের মধ্যে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হল 

  • খাদ্য শক্তি -১৪৬ কিলো ক্যালরি 
  • শর্করা-৩.৮৪ গ্রাম 
  • আমিষ - ১.০৩ গ্রাম 
  • চর্বি - ১৫.৩ দুই গ্রাম 
  • খাদ্য আঁশ - ৩.৩ গ্রাম 
  • চিনি ০.৫৪ শূন্য গ্রাম 
  • ভিটামিন এ - ২০ আই ইউ 
  • বিটা ক্যারোটিন -২৩১ আই ইউ 
  • রিবোফ্লাবিন -০.০০৭ মিলিগ্রাম 
  • থায়ামিন - ০. ০২১ 
  • নিউওসিন -০. ২৩৭ মিলিগ্রাম 
  • ভিটামিন বি৬ -০.০ ৩১ মিলিগ্রাম 
  • ভিটামিন ই - ৩. ৮১ মিলিগ্রাম 
  • আইরন -৩.১ মিলিগ্রাম 
  • পটাশিয়াম -৪২ মিলিগ্রাম 
  • ম্যাগনেসিয়াম -১১ মিলিগ্রাম 
  • ক্যালসিয়াম -৫২ মিলিগ্রাম 
  • ফসফরাস -৪  মিলিগ্রাম 

জলপাইয়ের পরিচিতি : জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

জলপাই একটি গ্রীষ্মকালীন টক ফল। জলপাই সিলন অলিভ( Ceylon olive) নামেও পরিচিত। জলপাইয়ের গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। জলপাই ভারতীয় উপমহাদেশে, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফলটি উৎপাদিত হয়। এই ফলটি সাধারণত শীতকালে পাওয়া যায়।

জলপাইয়ের একটি বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে। আর এর বৈজ্ঞানিক নাম হল ( Elaeocarpus  serratus) .

গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কি 

গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অনেক ভয় থাকে যে কোনটা খাওয়া যাবে কোনটা খাওয়া যাবে না এ নিয়ে অনেক কে চিন্তিত থাকেন। এই নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন যে, জলপাই খাওয়া যাবে কিনা জলপাই খেলে কোন ক্ষতি হবে কিনা। গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার জলপাই খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। কেননা জলপাই রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি উপাদান যা একজন গর্ভবতী মহিলার এবং গর্ভে থাকা শিশুর বিকাশের জন্য অনেক উপকারী। জলপাই থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য সহায়ক এবং আয়রনের স্বল্পতা পূরণেও সহায়ক।

গর্ভাবস্থায় জলপাইয়ের উপকারিতা :জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুন রয়েছে যার কারন জলপাইয়ের উপকারিতা ও অনেক। জলপাই খেলে এর অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। অনেকেই প্রশ্ন করেন যে গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কিনা, জলপাই খেলে কোন সমস্যা হবে কিনা, এমন নানান প্রশ্ন করে থাকেন। হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খাওয়া যাবেনা। গর্ভাবস্থায় জলপাই খেলে এর অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। চলুন তাহলে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় জলপাই খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

  • জলপাই এ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ রয়েছে। যার কারনে গর্ভাবস্থায় জলপাই খেলে গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়।
  • জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং হজমে ও সহায়তা করে থাক।
  • জলপাইয়ে রয়েছে অনেক আয়রন যা একজন গর্ভবতী মহিলাদের অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এ সময় মহিলাদের শরীরের যদি আয়রনের অভাব দেখা দেয় তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তখন আপনাকে আয়রনের জায়গা পূরণ করার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। কিন্তু আপনি যদি জলপাই খান তাহলে আয়রনের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। 
  • জলপাইয়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এর জন্য গর্ব অবস্থায় জলপাই খেলে গর্ভবতী মহিলাদের অনেক উপকার হয়। 
  • গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদের বমি বমি ভাব হয়, এমনকি বমিও হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি জলপাই খেতে পারেন কারণ জলপাই একটি টক জাতীয় ফল এটি খেলে বমি বমি ভাব দূর হবে এবং মুখে রুচি বৃদ্ধি পাবে। 
  • গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারা টক জাতীয় ফল খেতে বেশি পছন্দ করেন সে ক্ষেত্রেও আপনি জলপাই খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা। অতিরিক্ত খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। 
  • একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় রক্ত চলাচল ঠিক রাখার জন্য জলপাইয়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলপাই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী। 
  •  জলপাইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম যা শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করে। 
  • গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদের হজমে সমস্যা হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। জলপাইয়ে ফাইবার থাকার কারণে এসব সমস্যা সহজে দূর হয়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় জলপাই খেতে পারেন।
  • জলপাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, আয়রন ,ক্যালসিয়াম এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা গর্ভবতী মহিলা এবং গর্ভে থাকা শিশুর বিকাশের জন্য অনেক উপকারী। 

জলপাই তেলের উপকারিতা 

খুব কম সংখ্যক মানুষই রয়েছেন যারা জলপাই তেল সম্পর্কে জানেন না। জলপাইয়ের তেল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। যারা ওজন কমাতে আগ্রহী তারা জলপাই তেল রান্না করে খেতে পারেন আবার শরীরে ও ব্যবহার করতে পারেন । ওজন কমানোর জন্য এবং শরীরে ব্যবহারের জন্য বিশেষজ্ঞরা জলপাই তেল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জলপাই তেলের বেশ কিছু উপকারি দিক রয়েছে চলুন সেগুলো জেনে নেয়া যাক 

  • কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যা যাদের রয়েছে তারা জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল খেতে পারেন । এতে হজম শক্তি বাড়াই এবং পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠ্যকাঠিন্য এর সমস্যা দূর করতে আপনি জলপাই তেল খেতে এবং ব্যবহার করতে পারেন। 
  • আপনারা যারা ওজন কমাতে যাচ্ছেন তারা অবশ্যই রান্নায় অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করুন। জলপাই তেল শরীরে অধিক সক্রিয়ভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেবে এবং পাশাপাশি দেহে ভালো কোলেস্টেরল যোগাতে সাহায্য করবে। 
  • জলপাই তেলে রয়েছে ভিটামিন ই। জলপাইয়ের তেল ত্বক, চুল নকের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। জলপাই তেল ব্যবহার করে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে আপনার ত্বক অনেক সুন্দর এবং তাদের বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ত্বক ও চুলের যত্নে নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করলেঅনেক উপকারিতা পাবেন।

জলপাইয়ের আচারের রেসিপি 

জলপাইয়ের আচার অনেক মজাদার। বিভিন্ন রকমের আচারের মধ্যে জলপাইয়ের আচার অন্যতম। জলপাই কাচা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি জলপাই দিয়ে তৈরি টক ঝাল মিষ্টি আচর খেতেও খুব সুস্বাদু এবং মজাদার। যারা বেশি টক ঝাল  পছন্দ করেন তাদের জন্য জলপাইয়ের আচার পারফেক্ট। আচারটি ছোট বড় সকলেই খেতে পারবেন। জলপাইয়ের আচার স্বাদে যেমন লোভনীয় তেমনি এর উপকারিতা ও অনেক। 

জলপাইয়ের আচার তৈরীর উপকরণ সমূহ 

জলপাইয়ের আচার তৈরি করতে যেসব উপকরণগুলো প্রয়োজন হয় সেগুলো হল-জলপাই, সরিষার তেল, লবণ ,গুড়া মরিচ ,পাঁচফোড়ন, হলুদের গুঁড়া, শুকনা লাল মরিচ, ধনিয়া ,বিট লবণ, শুকনো মরিচ। রসুন, তেজপাতা, দারুচিনি, কালোজিরা, আস্তমরি এইসব উপকরণগুলো আচার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 

আচার তৈরীর প্রণালী 

প্রথমেই জলপাইগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর জলপাই গুলোকে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে জলপাইগুলোকে ভেঙে নিতে হবে। 

এরপর আসতো মসলাগুলোকে গরম করে নিতে হবে তবে সব মসলা একসাথে দেয়া যাবে না। তবে যেন সব মসলা গুলো কিছুতেই বেশি ভাজা না হয়ে যায় তাহলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এরপর ভাজা মসলা গুলো পাটাই বেটে গুঁড়ো করে নিতে হবে।  

এবার একটি প্যানে তেল গরম করে তেজপাতা, দারুন চিনি দিয়ে সাথে রসুন কুচি দিয়ে নেড়ে নিতে হবে। মিডিয়াম আচে রান্না করতে হবে। রসুন কুচিগুলো হালকা বাদামি আকার ধারণ করলে জলপাইগুলো দিয়ে দিতে হবে। তারপর লবণ ,চিনি, ভিনেগার গুঁড়ো মসলা সবগুলো দিয়ে দিতে হবে। এরপর আচারের পানিটা শুকিয়ে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে অবশ্যই লবণ চিনি একটু টেস্ট করে নেবেন ভালো হয়েছে কিনা। ব্যাস হয়ে গেল জলপাইয়ের আচার। 

জলপাইয়ের আচার সংরক্ষণ পদ্ধতি: 

  • আচার সংরক্ষণের জন্য একটি কাচের  বয়াম অথবা প্লাস্টিকের বয়াম লাগবে। ব্যায়ামের মধ্যে আচার ভালো থাকে।
  • আচার সংরক্ষণের জন্য প্রথমে একটা বয়াম ঠিক করুন 
  • বয়াম এর মুখ ঠিকঠাক লাগানো হয় কিনা বন্ধ করা যায় কিনা এটি দেখুন কারণ বয়ামের মুখ ঠিকঠাক বন্ধ করা না গেলে আচার নষ্ট হয়ে যাবে। 
  • নোংরা হাত অথবা আঙ্গুল দিয়ে আচার তুললে আচার নষ্ট হয়ে যায় এজন্য একটি শুকনো চামচ ব্যবহার করতে হবে। 
  • আচার তুলতে ভেজা চামচ ব্যবহার করলে আচার নষ্ট হয়ে যায় এজন্য শুকনো চামচ ব্যবহার করতে হবে। 
  • আচার সংরক্ষণ করে মাঝে মাঝে রোদে দিতে হয় তা না হলে আচার নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।
  • আচার ফ্রিজ ও সংরক্ষণ করা যায়। আপনি চাইলে ফ্রিজে ও সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।

জলপাই খাওয়ার নিয়ম 

জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক জলপাইয়ের প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই বলে জলপাই যে কোন সময় যেকোনো পরিমাণে খাওয়া যাবে না। জলপাই খাওয়ার কিছু নিয়ম এবং পদ্ধতি মেনে জলপাই খেলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। নিয়ম মেনে না খেলে আপনার শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে। আপনার শরীরের যদি কোন শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জলপাই খাওয়া উচিত।

জলপাই খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে জলফার খাওয়া সঠিক পরিমাণটি নির্ণয় করতে হবে। তা না হলে আপনি বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া সহ শরীরের যেকোনো সমস্যা হতে পারে। তো প্রতিদিন আপনি পাঁচ থেকে দশটি জলপাই খেতে পারেন। বেশি খাওয়া উচিত নয়। যারা গর্ব অবস্থায় জলপাই খাবেন তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। তাছাড়া আপনি যদি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে। 

আরো পড়ুন: আমলকি খাওয়ার উপকারিতা 

জলপাই বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এক এক জন মানুষ একেক রকম ভাবে জলপাই খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ জলপাই কাচা লবণ দিয়ে খেয়ে থাকেন, আবার কেউ রান্না করে বিভিন্ন তরকারির সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন আবার কেউ আচার করে খেয়ে থাকেন। জলপাই তরকারির সাথে রান্না করে খেলে এর স্বাদ অনেক ভালো এবং পুষ্টি পাওয়া যায়। তবে জলপাই মেসির ভাগ মানুষই আচার খেয়ে থাকেন। কেননা জলপাইয়ের আচার সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু এবং মজাদার হয়। এবং বেশিরভাগ মানুষ এটা পছন্দ করেন। তবে যারা ডায়েট কন্ট্রোল করছেন তাদের ক্ষেত্রে জলপাইয়ের নিয়ম করে খাওয়া উচিত। 

মন্তব্য: জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা

আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন জলপাইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা-গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। জলপাই যেকোনো বয়সের মানুষের খেতে পারেন তবে যারা গর্ভবতী রয়েছে তারা একটু পরিমাণ মতো খেতে হবে না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। জলপাই ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই আপনারা চাইলে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় জলপাই রাখতে পারেন। এটা আপনাদের শরীরের অনেক উপকার হবে। 

আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন রয়েল আই টির সাথেই থাকবেন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url