আমলকি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
পেজ সূচিপত্র: আমলকির উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
- আমলকির উপকারিতা: আমলকির অপকারিতা
- আমলকির পরিচিতি: আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা
- আমলকির গুনাগুন সমূহ
- আমলকি খাওয়ার অপকারিতা
- চুলে ব্যবহারে আমলকির উপকারিতা
- ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে আমলকির ব্যবহার
- খালি পেটে আমলকি কেন খাবেন?
- গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
- আমলকি খাওয়ার নিয়ম: আমলকির উপকারিতা
- উপসংহার: আমলকির উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় আমলকির উপকারিতা
আমলকির উপকারিতা: আমলকির অপকারিতা
আমলকি একটি উপকারী ফল এর অনেক উপকারিতা রয়েছে আয়ুর্বেদ অনুসারে আমলকি এমন একটি ফল যার রয়েছে অনেক উপকারিতা। অলও কি শুধু যে চুল বা ত্বকের জন্য উপকারী নয় বরং অনেক রোগের ওষুধ হিসেবেও পাস করে থাকেন। অন্যকে অনেক ভাবেই ব্যবহার করা যায় যেমন আমলকি রস আমলকির গুঁড়া আমলকির আচার ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমলকি ভিটামিন খনিজ ও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ একটি ফল যার কারণে এর উপকারিতা অনেক।
আমলকিকে আয়ুর্বেদ মতে আমলকি একটি অমৃত ফল। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে । আমলকিতে এমন সব বৈশিষ্ট্য ও প্রধান রয়েছে যা শরীরের জন্য অনেক
উপকারী। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক আমলকির উপকারিতা গুলো কি কি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি
রয়েছে তাই এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেন সাহায্য করে থাকেন এটি
নিয়মিত খেলে শরীরের সহজেই কোন রোগ সহজে বাসা বাঁধতে পারে না বিশেষ করে ভিটামিন
সি জাতীয় যেসব রোগ গুলো আছে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এটি শরীর
থেকে টক্সিক উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে এবং হজমে সাহায্য করে থাকে। তাই
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আমলকি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ
থেকে সহজে মুক্তি পেতে পারেন ।
দাঁতের মাড়ির চিকিৎসায়: আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এর
অভাবে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা হয় যেমন স্করপি রোগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া
রক্ত পড়া দাঁতের মাড়িতে ঘা হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই
সমস্যা প্রতিরোধে প্রতিদিন এক থেকে দুইটি আমলকি খাওয়া উচিত তাহলে এই সমস্যা
থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। কেননা আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি
রয়েছে।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা: চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী
ভূমিকা পালন করে থাকেন কেননা আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। আর
ভিটামিন এ এর অভাবে চোখে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয় যেমন চোখ লাল হওয়া
চোখ চুলকানো চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি রোগ থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া
যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস : উচ্চ কলেজের মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকে গিয়ে অনেক
বৃদ্ধি করে দিতে সাহায্য করে। আমলকি খেলে তা খালা খারাপ কোলেস্টেরও দূর করে
ধর্মনির ব্লক খুলে দিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত আমলকি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি
অনেকটাই কমে যায়।
পেটের অম্লতা চিকিৎসায়: অনেক মানুষই রয়েছেন যারা পেটের অম্ল তার সমস্যায় ভোগেন ।তাই এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য নিয়মিত আমলকি খারাপ কাজ করুন কারণ নিয়মিত আমলকি খেলে পেটের অম্লতা সমস্যা সহজে দূর করা যায়।
ডায়াবেটিস দূর করতে সাহায্য করে: আমলকিতে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা তকে
ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে রক্তে ইনসুলিন এর পরিমাণ ঠিক রাতে
আমলকির অনেক উপকারিতা হয়েছেG রক্তে ইনসুলিনার মাত্রা ঠিক থাকলে সহজে
ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হবেন না তাই ডায়াবেটিস দূর করতে বারণ করতে নিয়মিত
আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করুন
দাঁতের যত্নে আমলকির উপকারিতা: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি
রয়েছে দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে থাকে শুধু তাই নয় দাঁতের মাড়ি
থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আমলকি অনেক উপকারিতা রয়েছে
তাই কাঁচা আমলকির নুনদের প্রতিদিন একটা করে খান তাহলে দেখবেন আপনার দাঁত এই সকল
সমস্যা থেকে দূর হয়ে গেছে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান
রয়েছে, পাশাপাশি পলি ফেনাল জাতীয় উপাদান থাকায় এটি ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে
বাধা দেই। তাই নিয়মিত প্রতিদিন একটা করে আমলকি যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার
শরীরে ক্যান্সার সহজেই বাসা বাঁধতে পারবে না।
তারুণ্য ধরে রাখতে: আমলকিতে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত আমলকি খেলে আপনার শরীরের ত্বক টানটান থাকে এবং ত্বকের ভেতর থেকে টক্সিন বের করে ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতেও সাহায্য করেন। তাই নিয়মিত আমলকি খেলে আপনার ত্বকে বলি রেখা এবং বয়স ছাপ সহজে পড়বেনা।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধের: আমলকি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার দূর করতেও
দারুণভাবে সাহায্য করে থাকেন। আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ বা জলের
সাথে আমলকির গুঁড়ো এবং সামান্য পরিমাণ চিনি মিশিয়ে দুইবার খেতে পারেন তাহলে
আমরা শরীর থেকে এসিডিটির সমস্যা সহজে দূর হয়ে যাবে।
শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে: আমলকি শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে
থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত আমলকি খেলে আপনার শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট সহজেই ঝরে
যাবে তাই রাতে খাওয়ার পর শুকনো আমলকি গুড়া প্রতিদিন রাতে একটা করে খেতে পারলে
শরীরের জন্য অনেক উপকার হবে।
হজম ক্ষমতা বাড়াতে: বর্তমানে আমরা বিভিন্ন শাকসবজি এবং ফলমূল খেয়ে থাকি কিন্তু এইসব শাকসবজি কিংবা ফলমূল প্রত্যাকটিতে কীটনাশক বা ফরমালিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের হজমে অনেক সমস্যা হয়, গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। হজম শক্তি বাড়াতে আমলকির উপকারিতা রয়েছে অনেক। তাই প্রতিদিন সকালে আমলকি ভেজানো পানি কিংবা গোটা আমলকি খেলে আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অনিদ্রা দূর করতে: অনেকেই আছেন যাদের অনিদ্রা জাতীয় রোগ থাকে যার করেনে
তারা নিয়মিত ঘুমোতে পারেন না তাদের জন্য আমলকি অনেক উপকারী একটি ফল। তাই এই
অনিদ্রা দূর করতে আপনি প্রতিদিন অন্তত একটি করে আমলকি খেতে পারেন।
মানসিক চাপ কমাতে আমলকির উপকারিতা: দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বিভিন্ন ধরনের
কাজের চাপ থেকেই থাকে। এজন্য দেখা যাচ্ছে যে আমাদের মানসিক চাপ বাড়তে পারে আর
এই মানসিক চাপ কমাতে প্রতিদিন রাত্রে ঘুমানোর আগে যদি আমলকি ভিজানো জল কিংবা
আমলকি খাওয়া হয় তাহলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।
চুলের যত্নে আমলকির উপকারিতা: চুলের জন্য আমলকির অনেক উপকারিতা
রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ চুলের যতনে আমলকি ব্যবহার করে থাকে। তাই চাইলে
আপনিও আমলকির রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দুই তিন ঘন্টা রেখে চুলের গোড়া
শক্ত, চুল ওঠা এবং চুল পাকা বন্ধ করতে পারেন। শুধু কাঁচা আমলকি নয় শুকনো
আমলকিও পানিতে ভিজিয়ে নরম করে মাথায় লাগালে চুলের অনেক উপকার পাওয়া যায়।
রক্তশূন্যতা দূর করতে: আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই রক্তশূন্যতা দেখা দেয়
বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা দেই। তাই আমরা যদি নিয়ম করে প্রতিদিন
কাঁচা অথবা শুকনো আমলকি একটি করে খেতে পারি তাহলে সহজে রক্তশূন্যতা থেকে মুক্তি
পাব বা আমাদের আর রক্তশূন্যতা সহজেই দেখা দিবে না।
দীর্ঘমেয়াদি সর্দি-কাশি থেকে উপশম পেতে: আপনাদের যদি দীর্ঘ মেয়াদী
সর্দি কাশি হয় তাহলে অবশ্যই আপনারা আমলকি খাবেন তাহলে সহজেই আপনাদের সর্দি
কাশি দূর হয়ে যাবে।
খিদে বাড়াতে আমলকির উপকারিতা: আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের সহজে খিদে পায় না, তারা নিয়মিত আমলকি খেতে পারেন। কেননা আমলকি তো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি যা খিদে বাড়াতে সাহায্য করে। এমনকি আমলকিতে থাকা মেটাবল মানবদেহে শক্তি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে: অনেকেই আছেন যাদের বমি বমি ভাব
হয় এমনকি বমিও হয়। তারা নিয়মিত আমলকি অথবা আমলকির রস খেলে বমি বমি ভাব
দূর হয়। বমি বন্ধ করতে আমলকির রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আমলকির পরিচিতি : আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা
আমলকি হচ্ছে ফাইলঅন্তাসি পরিবারের পাইলাম ঠুসগণের এক এক প্রকার ভেষজ ফল। আমলকি কে সংস্কৃত ভাষায় বলা হয় আম্লক। এর ইংরেজি নাম হচ্ছে আমলা ( amla). আমলকির বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ( Phyllanthus emblica ) । আমলকিতে সমস্ত ধরনের মিনারেল ও ভিটামিন থাকে যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আমলকি কাঁচা বা জোস করেও খেতে পারেন না। আমলকি টক স্বাদের হয়ে থাকে। এটি ক্যান্সার ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।
আমলকির গুনাগুন সমূহ
আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। এটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ফসফরাস লোহা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর মত অনেক খনিজ এবং ভিটামিন রয়েছে।
পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজে লেবুর চেয়ে তিনগুণ ও ১০ মন ভিটামিন সি রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুন বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে 24গুন বেশি কলার্সের ষাট গুণ বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি দরকার সে ক্ষেত্দর একজন লোক প্রতিদিন দুটো করে আমলকি খেলে তার ভিটামিন চাহিদা পূরণ হয়ে যায় । আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে। আমলকি পেটের পিরা সর্দি কাশি ও রক্তহীনতার জন্য অনেক উপকারী এছাড়াও স্কার্ভি ও দন্ত রোগ সারাতে আমলকি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
আমলকি খাওয়ার অপকারিতা
আমলকি এমন একটি ফল যার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে কিন্তু কোথাও এর নেতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ নাই। আমলকি খেলে এর থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় কিন্তু এর অপকারিতা খুব কমই পাওয়া যায়। তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমলকি খেলে কিছুটা সমস্যা পরিলক্ষিত হয় চলুন জানা যাক সেসব বিষয়গুলো
- আপনার যদি হাইপার এসিডিটি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই ফলটি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। কেননা এসিডিটির এসিডিটি সমস্যা থাকলে আপনার শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারেন।
- আমলকি বেশি পরিমাণে খেলে আপনার শরীর অনেকটা মোটা হয়ে যেতে পারে। এজন্য আমলকি বেশি পরিমাণে খাবেন না, পরিমাণমতো খাওয়া উচিত।
- আমলকি খাওয়ার ফলে কিছু কিছু মানুষের এলার্জির সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও ডায়রিয়া পেট ব্যথা বমি বমি ভাব মুখে চারপাশে ফুসকুড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা আমলকি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। এমনকি বেশি পরিমাণে খেলে শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
চুলে ব্যবহারে আমলকির উপকারিতা
চুলে ব্যবহারের জন্য আমলকি একটি উপকারী ফল। চুলের বৃদ্ধি এবং চুল ঘন কালো করতে আমলকি চুলের টনিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুলের গোড়ায় শুকনা আমলকি বা কাঁচা আমলকি পেটে এর মিশ্রণ তৈরি করে চুলের গোড়ায় লাগালে চুলের বৃদ্ধি এবং চুলের রং উন্নত হয় ।
চুল পড়া বন্ধ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে আমলকি। চুলের অকালপক্কতা রোধ করে চুলের খুশকি সমস্যা দূর করে চুলের বহুমাত্রিক উপকার করে থাকে এই আমলকি। আমলকির নির্যাস দিয়ে তেল বানিয়ে চুলের গোড়াতে নিয়মিত লাগালে ফুলের বড়া অনেক বেশি শক্ত এবং মজবুত হয়।
চুলের জন্য আমলকির অনেক উপকারিতা রয়েছে। আচ্ছা আমলকি পেটে রস প্রতিদিন চুলে দুই তিন ঘণ্টা লাগিয়ে রাখলেন চুলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। এভাবে যদি একমাস ব্যবহার করা যায় তাহলে চুলের গোড়া শক্ত চুল ওঠা তাড়াতাড়ি চল পাকা বন্ধ হবে। আমরা সকলেই চাই ঘন কালো লম্বা চুল আর সেটা পেতে হলে আমাদের প্রত্যাকারী আমলকির তেল ব্যবহার করা উচিত। তাহলে আমলকির অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন: পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা
আমলকি জুস করেও আপনি চুলে ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি যে পরিমাণ রস বানাতে চান তার ওপর নির্ভর করে কয়েকটা আমলকির নেন। এক গ্লাস আমলকির জুস বানাতে ৩-৪টি আমলকি নিয়ে ছোট ছোট করে কেটে এক গ্লাস পানি যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এটি চুলে ব্যবহার করুন।
ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে আমলকির ব্যবহার
আমলকি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওষুধি গুনাগুন যার কারণে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমলকিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধে গুণ। গবেষণায় দেখা যায় যে, আমলকি ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে। আমলকি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া প্রতিদিন আমলকির জুস খেলে পেপট্রিক আলসার প্রতিরোধ সাহায্য করে থাকে। এমনকি আমলকির গুঁড়ো মধু দিয়ে প্রতিদিন খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তাই প্রত্যেকেরই উচিত নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করা।
খালি পেটে আমলকি কেন খাবেন?
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা খালি পেটে সকাল বেলা লেবু পানি খেয়ে থাকেন। অনেকেই আছেন তারণ্য ধরে রাখতে খালি পেটে লেবু পানি খান অথবা মেদ কমাতে লেবু পানি খেয়ে থাকেন। এই লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আবার শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করেন। তেমনি ভাবে আমলকিতে ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এবং আমলকি যদি আপনি নিয়মিত খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে এটি ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে আপনার শরীরে কাজ করবে।
আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং মেদ কমাতেও দারুন ভাবে সহায়তা করবে। লেবুর থেকেও বেশি উপকার মিলবে আপনার এই আমলকি খেলে। শুনতে হয়তো আপনাদের অবাক লাগছে কিন্তু এটাই সত্যি। কয়েকটা আমলকির টুকরো পানিতে নিয়ে কুসুম গরম পানি করে নিন এবং কুসুম গরম পানি সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন। এমনকি আপনি চাইলে আমলকি টুকরোগুলো চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের অনেক পরিবর্তন ঘটে থাকে, আর এই পরিবর্তনের কারণে অনেকে খাবারের রুচি কমে যায় খেতে পারেন না। এ সময় বেশিরভাগ মহিলারাই টক জাতীয় খাবার পছন্দ করে থাকেন। আমলকি টক জাতীয় ফল হওয়াই এ সময় মহিলারা আমলকি খেতে বেশ পছন্দ করে থাকেন। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়া অনেক উপকারী ।কেননা আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এ সময় চিকিৎসকেরাও আমলকি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আমলকি হচ্ছে এন্টি এন্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। আমলকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। গর্ভাবস্থায় আমলকি ফল খেলে সাধারণত জ্বর এবং মুত্রনালীর সংক্রমণ এমনকি বমি বমি ভাব দূর করতেও অনেকটাই সহায়ক হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি: গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদেরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় মহিলারা আমলকি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি মিলে। কেননা আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আমলকিতে রয়েছে আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি শোষণে নেও সাহায্য করেন এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: সাধারণ অবস্থায় মহিলাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা না থাকলেও গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদেরই ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়। আমলকির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে দেয় এজন্য গর্ব অবস্থায় মহিলাদের আমলকি খাওয়া অনেক উপকার।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: আমলকি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি এবং াঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালী গুলিকে প্রসারিত হতে সাহায্য করে যা স্বাভাবিক রক্তচাপ ধরে রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই গর্ভাবস্থায় আমলকি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সম্ভব।
হাত পা ফুলে যাওয়া রোদ করে: গর্ভ অবস্থায় মহিলাদের হাত পা ফুলে যায় একটা সাধারণ বিষয়। আমলকিতে থাকে অ্যান্টি ইনফ্লেমেন্টারি উপাদান যা দেহ কেয়া হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। তাই গর্ব অবস্থায় আমলকি খেলে হাত পা ফুলে যাওয়া থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়।
শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জলীয় উপাদান থাকায় মহিলাদের প্রসাবে কোন সমস্যা হয় না। এমনকি প্রসাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ গুলি বের করে দিতে সাহায্য করে।
শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক: আমলকির জুস খেলে গর্ভাবস্থায় শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থায় মহিলারা আমলকির জুশ খেলে গর্ভবতী মহিলা এবং গর্ভে থাকা শিশু উভয়েরই উপকার হয় এই জন্য গর্ভাবস্থায় আমলকি খেতে বলা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন: খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমলকির গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না কারণ আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য প্রকারিতা রয়েছে। যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। তাই সুস্থ অবস্থায় এবং গর্ব অবস্থায়ও আমলকি খাওয়া অনেক উপকার।
আমলকি খাওয়ার নিয়ম : আমলকির উপকারিতা
আমলকি অনেকে অনেক ভাবে খেয়ে থাকেন। আমলকি কেউ জুস বানিয়ে খেয়ে থাকেন কেউ শুকনা আমলকি ভিজিয়ে খেয়ে থাকেন। যে যেভাবে খেয়ে থাকেন না কেন এর থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। এটি আসলে শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। তবে আমলকি খাওয়ার বিশেষ কতগুলি নিয়ম রয়েছে। যেকোনো সময় যেকোনো পদ্ধতিতে আমলকি খাওয়া ঠিক নয়। এতে করে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই বিষেশ কতগুলি নিয়ম মেনে আমলকি খাওয়া উচিত
- গোটা কাঁচা আমলকি চিবিয়ে খেতে পারেন । তবে আমলকি চিবিয়ে খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পানি খাবেন।
- কাঁচা আমলকি ব্লেন্ডার এ ব্লেন্ড করে রস বের করে এর রস খেতে পারেন। রস বের করে দুই তিন চামচ রস খেতে পারেন তবে কোনভাবেই পানি দিয়ে নয় এমনি তেই খেতে হবে।
- আমলকি কেটে রোদে শুকিয়ে আমলকি শুকনো করে নিতে পারেন। এই শুকনো আমলকি প্রতিদিন রাত্রে ভিজিয়ে এর রস পান করতে পারেন।
- গরম জলের সাথে আমলকি ভিজে এক সপ্তাহ রেখে দিন এবং সেই পানি প্রতিদিন এক দুই চামচ করে পান করুন।
- একটি আমলকি রাতে কেটে এক গ্লাস জলের মধ্যে রেখে দিন এবং এই জলটি প্রতিদিন সকালে উঠে খেয়ে নেন এতে আপনার শরীরের অনেক উপকার হবে।
- আমলকির আচার বা জ্যাম বানিয়েও আমলকি খাওয়া যায়।
উপসংহার : আমলকির উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় আমলকির উপকারিতা
উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় আমলকি খাওয়ার উপকারিতা, আমলকির পুষ্টি গুনাগুন, চুলে আমলকির ব্যবহার। খালি পেটে আমলকি খাওয়া যাবে কিনা। আশা করি বিষয়গুলো আপনারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার কারণে এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই জন্য সকলেরই আমলকি ফল খাওয়া উচিত।
আমলকি একটি আয়ুর্বেদিক উপাদান হিসেবে ও পরিচিত। আমলকি ঔষধি হিসেবেও খাওয়া যায়। এই ভেষজ ফলটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবেও কাজ করে। এতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লোহা, ক্যারোটিন এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর মত অনেক খনিজ ভিটামিন রয়েছে। যার জন্য এটি সুস্থ শরীরে ও খাওয়া যায় এমনকি অসুস্থ শরীরে খাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় খেলেও এর থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনি আমলকি ফল সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এরকম স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়ে থাকে। আর্টিকেল সম্পর্কিত আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আপনি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url