লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুস্টিগুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করব লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে। তাই যারা লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না কিংবা জানার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি ।আশা করছি আপনারা মনোযোগ সহকারে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়বেন। 

এই আর্টিকেলটিতে লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনারা মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়লে লটকন সম্পর্কে জানতে পারবেন। আশা করছি আপনারা সকলেই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

পেজসূচিপত্র: লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা

লটকনের উপকারিতা

লটকন ফল প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ঔষধি গুণে ভরপুর একটি ফল। এটি মৌসুমী ফল হওয়ায় এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। শরীর সুস্থ ও ভালো রাখার জন্য লটকন ফল অনেক উপকারী। আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত খাদ্য তালিকায় মৌসুমী ফল রাখা উচিত এতে করে আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়ে যায় ।লটকনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিংক, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

আরো পড়ুন: জামের উপকারিতা ও অপকারিতা

লটকনের উপকারিতা অনেক।তাই আজকে আমরা লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব। কিন্তু তার আগে এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানব । চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক লটকনের উপকারিতা গুলো কি কি

রােগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই এই ফলটি খেলে শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি সহজে পূরণ হয়ে যায় এবং লটকন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। লটকন ফলে থাকা ভিটামিন সি যা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার সাহায্য করে এবং শরীরের বিভিন্ন অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকন ফলে রয়েছে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে: যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে টেনশন করছেন ওজন কমাতে পারছেন না এবং শরীরের মেদ বেড়ে গেছে তাদের জন্য লটকন অনেক উপকারী একটি ফল। লটকন মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে ও সাহায্য করে। যারা অতিরিক্ত মেদ ও ওজনের টেনসনে আছেন তারা নিয়মিত লটকন খেতে পারেন এতে অনেক উপকার পাবেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেন: ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে পারেন না। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লটকন ফল অনেক উপকারী একটি ফল। তাই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা লটকন ফল খেতে পারেন। এই ফলটিতে রয়েছে ক্যালোরি ও ফ্যাট অনেক কম পরিমাণে যার কারণে ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য এই ফলটি অনেক উপকারী।

অধিক পরিমানে ক্যালরি: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে প্রতি 100 গ্রাম লটকনের পরিমাণ প্রায় ৯২ গ্রাম। যেখানে কাঁঠালের পরিমাণ পাওয়া যায় প্রতি ১০০ গ্রামে ৪৬ গ্রাম। তাই এই ফলটির নিয়মিত খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং শরীর সুস্থ সবল থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ভিটামিন বি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম রয়েছে। এইসব উপাদানগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই লটকন ফল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য অনেক উপকারী। তাই আমরা প্রত্যেকে নিঃসন্দেহে লটকন ফল খেতে পারি।

অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। অ্যানিমিয়া রোগ মূলত আয়রনের স্বল্পতার কারণে হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত লটকন খেলে আয়রনের সল্পতা সহজে দূর করা যায়। যার কারণে লটকন ফল নিয়মিত খেলে সহজেই এনিমিয়া রোগ থেকে থেকে দূরে থাকা যায়।

চোখ লাল হওয়া: অনেকেরই বিভিন্ন কারণে চোখ লাল হয়ে যায় চোখ চুলকায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। লটকন ফল খেলে এই সমস্যা গুলো থেকে সহজে রেহাই পাওয়া যায় ।চোখ লাল হওয়া থেকে শুরু করে চোখে চুলকানি সারাতেও লটকন ফল অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত লটকন ফল খেলে চোখ লাল হওয়া এবং চোখে চুলকানি সহজেই হয়ে যায়।

ডিহাইড্রেশন কমায়: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে তাই এটি ডিহাইড্রেশন কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে থাকেন। এই ফলটি আপনি পানি তৃষ্ণা নিবারণের জন্য ফলটি খেতে পারেন ফলটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী তাই এটা নিয়ম।

পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে: লটকনের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার উপাদান যা পরিপাকতন্ত্রের সঠিক কাজ করতে সাহায্য করে থাকে। এই ফলটি অন্ত ও পাকস্থলীর মতো পরিপাক অঙ্গগুলো কার্যকারিতা উন্নত কত সাহায্য করে। তাই নিয়মিত এই ফলটি খেলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখা যায়।

চর্মরোগ নিরাময়ে সাহায্য:  এই ফলটি খুব শক্তিশালী একটি ফল।এই ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ যেমন চুলকানি, খোসপচড়া, দাদ, পানু ইত্যাদি সারাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে: লটকন একটি অন্যতম ফল যে ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার কারণে এই ফলটি খেলে আমাদের শরীরের শক্তি বাড়তে পারে। এ ফলটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন খনিজ এবং প্রোটিন থাকে যা খেলে আমাদের শক্তিতে পরিণত হয় । আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত লটকন ফল খেতে পারেন তাহলে সারাদিন সক্রিয় থাকতে পারবেন।

স্নায়ুর দুর্বলতা কামাই:  লটকন ফল খেলে আমাদের শরীরের দুর্বলতা অনেকটাই কমে যায় কেননা লটকনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা স্নায়ুর দুর্বলতা দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এটি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে সাহায্য করে থাকে। 

ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে তাই প্রতিদিন এটি দুই- তিনটি ফল খেলে শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ভিটামিন সি ত্বক ,দাঁত ও হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, লটকন ফলে ভিটামিন সি বেশি থাকায় এটি দিনে দুই তিনটি খেলে ভিটামিন সির  চাহিদা মিটে যায।

এছাড়াও লটকন ফলের মধ্যে রয়েছে নানা রকম পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। এই ফলটি রুচি বাড়াতেও বেশ উপকারী এবং গরমের সময় তৃষ্ণা মেটাতেও সক্ষম । কারণ এই ফলটিতে জলীয় অংশের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত লটকন ফল বেশি বেশি করে খাওয়া তাহলে এর থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে।

লটকন ফলের অপকারিতা সমূহ

লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার জন্য এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী ।এটি খেলে আমাদের শরীর সুস্থ এবং সবল থাকে নিয়মিত লটকন ফল খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এই ফলটির উপকারিতা অনেক। এই ফলটির অপকারিতা তেমন নাই বললেই চলে, কারণ হচ্ছে এই ফলটিতে যেসব পুস্টি উপাদান রয়েছে তার কোনটি তেমন ক্ষতিকারক নয় বরং আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে লটকন ফলের অপকারিতা লক্ষ্য করা যায় যেগুলো আমাদের শরীরের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক সেসব দিকগুলো

  • লটকন ফল বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
  • এই ফলটি খালি পেটে খেলে আপনার যেকোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে এজন্য এটি খালি পেটে না খেয়ে খাওয়ার পর খাওয়া উচিত।
  • লটকন ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই মনে রাখবেন লটকন ফল খাওয়ার সাথে সাথে দুধ খাওয়া উচিত নয় এইজন্য এই ফলটি খাবার আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা পর দুধ খাওয়া উচিত।
  • কিছু কিছু মানুষ আছে  যাদের লটকন খেলে এলার্জি সমস্যা হতে পারে এবং যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা এই ফলটি খেলে সমস্যা হতে পারে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ফলটি খেতে পারেন।

তাহলে আপনারা বুঝতে পারছেন যে, আসলে লটকন ফল এর উপকারিতা অনেক বেশি কিন্তু এর অপকারিতা খুবই সীমিত। এজন্য আপনারা খাবার টেবিলে নিয়মিত লটকন ফল রাখতে পারেন এবং নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনাদের  অপকারিতা চেয়ে উপকারিতায় বেশি পাবেন।

লটকনের পরিচিতি: লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা

লটকন ফলটি বর্তমানে আমাদের দেশে সবার কাছেই প্রায় পরিচিত। এটি মূলত বর্ষাকালীন একটি ফল। এটি এক প্রকার হলুদ রঙের ছোট্ট গোলাকার ফল ।এটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হয়ে থাকে কিন্তু পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। টক মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি খেতে অনেকেরই ভীষণ পছন্দ করেন । অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে এই ফলটিতে, বিভিন্ন ঔষধি হিসেবেও কাজ করে। এমনকি এর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে থাকে।

লটকনের নামকরণ

লটকন ফলের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। বিভিন্ন দেশ বা এলাকা ভেদে লটকনের অনেক সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে তেমনি এর সুন্দর একটা ইংরেজি নাম রয়েছে। আবার লটকন ফলের চমৎকার একটা বৈজ্ঞানিক নাম ও রয়েছে । লটকন ফলকে ইংরেজিতে বলা হয় (Burmese Grape) বার্মিজ গ্রেপ। 

আর লটকনের বৈজ্ঞানিক নাম হল (Baccaurea Motleyana, Baccaurea Sapida)।  লটকন কে বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়ে থাকে। এক এক এলাকায় এক এক নামে পরিচিত। যেমন বগি, লটকা, বুবি, ডুবি, লটকিউ, কিছুআন, হাড় ফাটা,রামবাই ইত্যাদি নামে পরিচিত। 

লটকনের পুষ্টিগুণ

লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই আছেন যারা লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকের পোস্টটিতে আমরা তুলে ধরবো লটকনের পুষ্টিগুণ সমূহ। লটকনের বেশ কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার, এমনকি লটকন আমাদের শরীরের বিভিন্ন অসুখ বিসুখ সারাতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে

আরো পড়ুন: কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ

প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ০.৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রোমিয়াম থাকে। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, টামিন বি ১ ভিটামিন বি ২। পাকা লটকন ফল খাদ্যের দিক দিয়ে অনেক উপকারী একটি ফল।এতে চর্বির পরিমাণ খুবই কম এবং শর্করা নেই বললেই চলে, তাই বিভিন্ন বয়সের মানুষ নিশ্চিন্তে লটকন ফল খেতে পারেন। আর এই জন্য লটকন ফলের উপকারিতা অনেক।

লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার এর পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান বলেন,- লটকন পুষ্টি ও ঔষধি গুণে ভরপুর একটি ফল। এটি মৌসুমি ফল হওয়ায় শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। আমাদের খাদ্য তালিকায় সব সময় মৌসুমী ফল রাখার চেষ্টা করা উচিত ।এতে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। লটকনে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রণ, ভিটামিন বি এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই প্রতিটা মানুষের শরীরের জন্য লটকনের উপকারিতা অনেক।

লটকন খেলে কি ওজন বাড়ে

লটকনে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার জন্য লটকনের উপকারিতা অনেক। লটকন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারীঅ লটকন ফল খেলে আমাদের শরীরের অনেক ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। যাইহোক বর্তমানে মানুষ অনেক সচেতন তাই কোন জিনিস খাওয়ার আগেই চিন্তা করেন যে আসলে এটা শরীরের জন্য ক্ষতি না উপকার। আবার অনেকেই শরীরের ওজন নিয়ে অনেক টেনশন করেন, শরীরের মেদ বেড়ে যায় এই জন্য যে কোন খাবার খেতেই ভয় পান।

তাই আমি বলব যে যারা ভয় পাচ্ছেন তারা ভয় পাবেন না কারণ লটকন ফল খেলে আপনার শরীরের ওজন বাড়বে না বরং দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করবে। আর যারা অনেক মোটা এবংযাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে  তাদের জন্য এই ফলটি অনেক উপকারী একটি ফল। এই ফলটিতে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট খুবই সীমিত পরিমানে থাকার কারণে শরীরের মেদ কমাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে থাকে। যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা দুশ্চিন্তা করবেন না। কারণ আপনি যদি নিয়মিত লটকন ফল খান তাহলে অতিরিক্ত মেদ এবং ওজন কমাতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে কিনা

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন গর্ভাবস্থায় রক্ষণ ফল খাওয়া যাবে কিনা। গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খেলে কোন সমস্যা হবে কিনা এসব বিষয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। যারা এসব বিষয়ে জানেন তাদের তো জানেনই কিন্তু যারা আমাদের সমাজে অনেকে আছেন যারা এখনো লটকন ফল সম্পর্কে জানেন না অনেকে চিনে না তাদের জন্য এ বিষয়গুলো আসলে জানা দরকার। 

তবে হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে। কারণ লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে তাই এই ফলটি গড় অবস্থায় খেলে গর্ভবতীর বাইরে অনেক ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় প্রসবকালীন সময় মহিলাদের অনেক সমস্যা হয়ে থাকে অনেক অসুখ বিসুখের দেখা মিলে, অনেক পুস্টির অভাব হয়ে থাকে। ফলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। এ অবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা যদি লটকন ফল খেয়ে থাকে তাহলে অনেক সমস্যা সহজে দুর হয়ে যায়। 

লটকন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম সহ অনেক পুষ্টি উপাদান। লটকন ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । গর্ভবতী মহিলাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে এবং প্রসবকালীন সময় বিভিন্ন জটিলতা থেকে রক্ষা করে।

তাই যারা গর্ভবতী মহিলারা আছেন তারা নিঃসন্দেহে লটকন ফল খেতে পারেন তাহলে আপনারা এর থেকে অনেক উপকার পাবেন এবং আপনাদের ভিটামিনের চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে।

গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়ার উপকারিতা অনেক গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার অনেক খাদ্য শক্তির প্রয়োজন হয় তাই গর্ভাবস্থায় এসব খাদ্য শক্তির চাহিদা পূরণ করার জন্য আপনি লটকন খেতে পারেন। লটকনের প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো:

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার ভিটামিন সি এর চাহিদা অনেক বেশি আর এই ভিটামিন সি লটকনে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে তাই এ সময় মহিলারা লটকন ফল খেতে পারেন।

  • লটকনে প্রচুর পরিমাণে চর্বি, আমিষ, লৌহ ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। তাই এটি খেলে মানসিক অবসাদ দূর হয়। লটকন খেলে গর্ভবতী মহিলারা সহজে দুর্বল অনুভব করেন না।
  • গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের অনেক সময় খাবারের রুচি কমে যায় তাই খাবারের রুচি বাড়ানোর জন্য গর্ভবতী মহিলারা লটকন খেতে পারেন। কেননা লটকন খেলে খাবারের রুচি বাড়ে।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অনেক সময় বমি বমি ভাব হয় এমনকি বমি হয় সে সময় মহিলারা কোন কিছু খেতে পারেন না এবং মুখের রুচি হারিয়ে যায়। তাই আপনি চাইলেই গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খেতে পারেন। এ সময় লটকন খেলে আপনার মুখে বমি বমি ভাব সহজে দূর হয়ে যাবে এবং খাবারের রুচি বাড়বে।
  • লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড ও এনজাইম যা গর্ভে থাকা বাচ্চার গঠন এবং কোষ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ।
  • লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ভিটামিন বি ১ ভিটামিন বি২  রয়েছে।এটি শরীর ভালো রাখার জন্য অনেক উপকারী।
  • গর্ব অবস্থায় লটকন খাওয়া নিরাপদ কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খাবেন না, খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করতে পারে। তাই এটি গর্ব অবস্থায় পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। 

 জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর সমূহ

১। লটকন ফল খেলে কি কি উপকার হয়?

উত্তর: লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই এই ফলটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। লটকন ফলের উপকারিতা অনেক। লটকন ফল খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে থাকে লটকন ফল। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই লটকন ফল খাওয়া উচিত।

২। লটকন ফল এর ইংরেজি নাম কি?

উত্তর: লটকন ফলকে ইংরেজিতে বলা হয় (Burmese Grape) বার্মিজ গ্রেপ। 

৩। লটকন ফলের বৈজ্ঞানিক নাম কি?

উত্তর: লটকন ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হল (Baccaurea Motleyana, Baccaurea Sapida) ।

৪। ফল খেলে কি ওজন বাড়ে?

উত্তর: আপনারা অনেকেই মনে করেন লটকন ফল খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যাবে এবং মেদ বেড়ে যাবে কিন্তু মোটেও না লটকন ফল খেলে শরীরের ওজন কমে যাবে এবং শরীরের মেদ কমাতে লটকন ফল সাহায্য করে থাকে। তাই আপনারা দ্রুত ওজন কমাতে এবং শরীরের মেদ কমানোর জন্য লটকন ফল খেতে পারেন।

৫। গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে?

উত্তর: হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে লটকন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার কারণে গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভবতী মায়েদের অনেক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া ভালো।

উপসংহার: লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা 

আজকের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা এর পুষ্টি গুনাগুন,লটকন খেলে কি ওজন বাড়ে, গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে কিনা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনারা যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই লটকনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে অবশ্যই জানতে পারবেন।

এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের পড়ে ভালো লেগে থাকে এবং এই ধরনের পোস্ট আরও পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন,এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। পোস্ট সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন বা কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url