খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে জানুন

আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে। খেজুর হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের একটি সুপরিচিত এবং সুস্বাদু একটি ফল। এর উপকারিতা এবং এর পুষ্টি গুনাগুন অনেক।
এই পোস্টটি থেকে আপনারা আরও জানতে পারবেন শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। খেজুর সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানতে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্র: খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

খেজুর সকলের কাছেই পরিচিত একটি ফল। এর অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার জন্য খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান থাকায় নানান ধরনের রোগ নিরাময় করার ক্ষমতা রয়েছে এই খেজুরের।এর পুষ্টি গুনাগুন আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে থাকে। তাই বলা যায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সমূহ:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এইসব উপাদানগুলি আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা যেমন গলা ব্যথার, বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদিতে অনেক উপকারী। নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

আরো পড়ুন: পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে : খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক অত্যাবশক। যেমন ভিটামিন এ,  বি ১, বি টু ,বি ৩ সহ নানা ভিটামিন উৎস রয়েছে এই খেজুরে। তাই খেজুর দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। চাঁদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা চোখের সমস্যা দূর করার জন্য নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।

কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় : খেজুর কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও উপাদান থাকায় এটি খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি বাড়তে সাহায্য করে। তাই কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন তাহলে আপনার শরীরে কোনো ক্লান্তি আপনাকে ঘিরে ধরতে পারবে না।

স্নায়ুতন্ত্রের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় : খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকায় স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, যেসব ছাত্রছাত্রী নিয়মিত খেজুর খায় তাদের কর্মক্ষমতা তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় অনেক ভালো। তাই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে নিয়মিত খেজুর খাওয়া শুরু করুন।

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় : মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা হৃদরোগ ও স্টকের ঝুঁকির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, খেজুর শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাই এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃত্তিতে সাহায্য করে।

হজম শক্তি বাড়ায় : অনেকেই আছেন যাদের কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন । এতে করে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। খেজুর এমন কিছু পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে

হিমোগ্লোবিনের সামাজস্যতা বাড়ায়: খেজুর শরীরের হিমোগ্লোবিনের সামদস্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, আর এই আয়রন শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্র বৃদ্ধি করে। যদি শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় বা হিমোগ্লোবিনের কমতি হয় তাহলে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। তাহলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বজায় থাকবে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকভাবে এবং রক্তে কোষ উৎপন্ন হবে।

ত্বকের যত্নে সাহায্য করে : ত্বক ভালো রাখতে খেজুর বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মানুষের ছাপ প্রথম ত্বকে ধরা পড়ে। আর এই ত্বকের যত্নে আপনি নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। নিয়মিত খেজুর খেলে ত্বক শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচে এমনকি নানা ধরনের সমস্যা দূর করে। ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ত্বকের ফ্যাকাসে ভাব ও হরমোনের সমস্যা কমাতে বেশ কার্যকরী খেজুর।

হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে : খেজুর হাড়ের সুরক্ষায় দারুন ভাবে কাজ করে। কেননা খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আর এই ক্যালসিয়াম আর গঠনে এবং আর মজবুত করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে একটি দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্য ও সুরক্ষিত রাখে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকাই এটি ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। 

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী: খেজুর খাওয়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক উপকারী। কেমন খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা নারীদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় খেজুরে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও পুষ্টির উপাদান গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির চাহিদা পুরন করে থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে আর এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আইরন। যা শরীরের আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি খেজুরের মিষ্টতা চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করে। তাই একটি ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন 

খেজুর একটি মিষ্টি জাতীয় ফল খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। খেজুরে যে সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো হল আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে সহ প্রচুর পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার। আর এসব উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

খেজুর খাওয়ার অপকারিতা

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অনেক। কিন্তু এর উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অনেক অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে তারপরে খেজুর  খাওয়া উচিত। আবার যাদের দেহে পটাশিয়াম এর পরিমাণ অনেক বেশি তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তা না হলে শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে।

শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

খেজুর মধ্য প্রাচ্যের একটি সুস্বাদু ও সুপরিচিত ফল। আর এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম সহ নানান পুষ্টিকর উপাদান। আর এসব পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আসুন তাহলে জেনে নিন শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সমূহ: 

  • নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে যেমন ত্বকের বলিরেখা নিয়ন্ত্রণ করতে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও খেজুর ত্বকের ফ্যাকাস ভাব দূর করতে এবং হরমোনের সমস্যা কমাতে খেজুর কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
  • নিয়মিত খেজুর খেলে এটি শরীরের হাড় গঠনে সহায়ক হয়। কেননা খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড়কে  মজবুত করতে সাহায্য করে। 
  • খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর এই আয়রন শরীরের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে থাকে খেজুর। একই সাথে খেজুরের মিষ্টতা চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  • খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি লাভ করতে পারবেন। 
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার কারণে এটি গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের অনেক উপকার হয়। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের অনেক পুষ্টির অভাব দেখা দেয় আর সেসময় খেজুর নিয়মিত খেলে সেসব পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়। 
  • খেজুরে নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকায় এটি মস্তিষ্কে চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয় সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই আপনারা চাইলে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন এতে আপনাদের শরীরের অনেক উপকার হবে।

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি ফল। রোজার সময় আমরা প্রায় প্রতিটা মানুষই খেজুর খেয়ে থাকি কিন্তু বর্তমানে শুধু রোজা বা রমজান মাসই নয় সব সময় খেজুর পাওয়া যায় এবং অনেকেই নিয়মিত খেজুর খেয়ে থাকি। খেজুরের উপকারিতা অনেক এবং এর পুষ্টিগুণাগুনও  অনেক। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুর যদি আমরা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেতে পারি তাহলে এর থেকে আমরা অনেক উপকার পাব। 

আরো পড়ুন: চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রতিদিন সকালে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেলে আপনার শরীরের ধারে কাছে কোন রোগ সহজেই ভিড়তে পারবে না। কেননা এর প্রয়োজনী পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করে থাকেন। ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেও খেজুরের অনেক গুণাগুণ রয়েছে। খেজুরে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন ,ফাইবার এবং আয়রন যা আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দিতে সক্ষম। 

বি আর বি হসপিটালের প্রধান পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন যে, পাকা খেজুরের প্রায় ৮০% চিনি জাতীয় উপাদান থাকে। তাই সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে এর উপকার অনেক বেশি। তাছাড়া আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করলে ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট আগে কয়েকটা খেজুর খেলে নিতে পারেন তাহলে এর উপকার অনেক বেশি।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা 

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ যার নতুন করে বলার  কিছু নেই। খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি ২, আমিষ, শর্করা, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, খনিজ পদার্থ, আয়রন এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন সি ফলিক এসিড ম্যাঙ্গানিজ সালফার ম্যাগনেসিয়াম। হ্যাঁ নিয়মিত খেজুর খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে হার্টের স্বাস্থ্য ভালোকরে রক্তে  শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে।  

বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, ভিজিয়ে  রাখা খেজুর সকালে খালি পেটে খেতে হবে তাহলে এটি শরীরের অনেক রোগ থেকে শরীরকে মুক্তি দেবে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ভিজিয়ে রাখা খেজুর খেলে কি উপকারিতা পাওয়া যায়। 

খেজুর বেশিক্ষণ  ভিজিয়ে রাখলে ভেজানো খেজুরে থাকা ট্যানিন ও ফাইটিক এসিড দূর হয় যা এর পুষ্টিগুণকে সহজেই শোষণ করে।  সহজেই হজম হয়ে যায় আপনাদের যদি এই অভ্যাস আগে থেকে না থাকে তবে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন । ভিজিয়ে রাখা খেজুর আপনি নিয়মিত খেলে এর থেকে অনেক  উপকারিতা পাবেন। 

খেজুরের পুষ্টিগুণ শোষণ করে নিতে চাইলে এটি খাওয়ার আগে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। এরপর সকালে উঠে খালি পেটে খেয়ে ফেলুন। এতে আপনার শরীর সতেজ থাকবে এবং অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকবে। 

যারা ওজন কমাতে চান বা ওজন নিয়ে টেনশনে আছেন তারা চাইলে নিয়মিত ভেজানো খেজুর খেতে পারেন। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার তাই এটি ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের সুযোগ দেয়না। তাই নিয়মিত ভেজানো খেজুর খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

দুধ ও খেজুর দুটি আয়রনের খুব ভালো উৎস। দুধের স্বাদ বাড়াতে দুধের  সাথে কয়েকটি খেজুর মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা অনেক পাওয়া যায়। তবে দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে শুধু স্বাদই বাড়ে না এর পুষ্টিগুনো ভরপুর। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এভাবে খেজুর খেতেন। কারণ এতে পুষ্টিগুণ অনেক। এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। দুধের সাথে খেজুর একসাথে মিশে গেলে এর অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় চলুন জেনে নেয়া যাক এর উপকারিতা :

রক্তশূন্যতা দূর করে : প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা দূর হবে এবং শরীর অনেক শক্তিশালী হবে। ফলে আপনাদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় দুধ ও খেজুর রাখা উচিত।

শরীরের দুর্বলতা দূর করে : আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাদের শরীর অনেক দুর্বল বা যারা গরমের সময় কাজ করে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তারা নিয়মিত দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে এই সমস্যার সমাধান পাবেন। দুধের মধ্যে দুই তিনটি খেজুর মিশিয়ে খেলে আপনার পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে এবং শরীরে গ্লোকুজ ও শরীরের শক্তির যোগান দিয়ে থাকে।

ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না : খেজুর ও দুধ একসাথে খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। কারণ দুধে ও খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার ত্বকের বার্ধক্য জনিত সমস্যা গুলি দূর করতে সাহায্য করে। চুলকানি ও ত্বকের বিভিন্ন প্রদাহ দূর করতে এই পানীয় খুব উপকারী। তাই এই সমস্যা দূর করতে আপনি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় দুধ ও খেজুর রাখতে পারেন।

হজমে সাহায্য করে : আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে যার ফলে পেটে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। আর এই সমস্যা দূর করার জন্য আপনি নিয়মিত দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন। কেননা খেজুরের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে আর এই ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে থাকে।

গেটে বাঁথ নিরাময় করে: দুধ ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস তাই দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে হাড় অনেক মজবুত হয়। ফলে গেটে বাথের সমস্যা থাকলে এ পানীয় পান করলে সহজে সেটা দুর হয়ে যায়।

ওজন কমাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে তাই খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। খেজুর আমাদের শরীরের অনেক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে থাকে শুধু তাই নয় খেজুর আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। যারা শরীরে ওজন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছেন বা টেনশন করছেন যে শরীরের ওজন কমাবেন কি করে। তাদেরকে বলছি কোন টেনশন না করে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন তাহলে আপনি আপনার ওজন কমাতে পারবেন খুব সহজেই। 

যারা শরীরের ওজন কমাতে চান তাদের জন্য খেজুর কার্যকারী একটি খাবার। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে আর ফাইবার ক্ষুদা কমায় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার সুযোগ দেয় না অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনি চাইলে নিয়মিত খেজুর খেয়ে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। খেজুরে ফাইবার থাকার কারণে এটি মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে সহজ করে। ফলে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদেরও অনেক উপকার করে থাকে। পরিপাকতন্ত্র কেউ পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক খেজুরের অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার জন্য গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। গর্ভাবস্থায় শিশুর ও মায়ের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি সিক্স, আইরন ইত্যাদি ও উপাদানগুলো মা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য খুবই উপকারী। আর এইসব উপাদানগুলো খেজুরে যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। তাই খেজুর খেলে গর্ভাবস্থায় মাকে দ্রুত শক্তির যোগান দেই শরীরের দুর্বলতা কামাই সতেজ সক্রিয় থাকতে সহায়তা করে ।

খেজুরে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট ও ফেনোলিক যৌগ সমৃদ্ধ থাকে বলে এটি কোষের ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর সুস্থ রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ব অবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সমূহ:

প্রসাব বেদনার ব্যথা কমায় : গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে মহিলাদের অনেক উপকার হয়। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খেলে মহিলাদের বেদনাদায়ক লেবার পেইন অনেকটা কম হয়। নিয়মিত খেজুর খেলে ইউটেরাসের সম্বোধনশীলতা অনেকাংশেই কমে তা শক্তিশালী হয়।

শরীরের রক্ত উৎপন্ন করেন: মহিলাদের সন্তান প্রসব করার সময় শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে যায়। এতে মহিলাদের শরীর দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি নানা জটিলতা দেখা দেয়। এইজন্য নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের দ্রুত রক্ত তৈরি হয় এবং শক্তির সঞ্চার হয়। 

জরায়ুর পেশী শক্তি শালী করে: নিয়মিত খেজুর খেলে মহিলাদের জরায়ুর বেশি শক্তিশালী হয়। খেজুরে অক্সিটোসিন নামক এক ধরনের হরমোন থাকে যা জরায়ুর পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোন প্রসবের সময় প্রসব বেদনার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে থাকে। 

হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়তা করে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন কে রয়েছে। খেজুরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন কে শরীরের হাড় ও দাঁত গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যার জন্য নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত এতে করে গর্ভবতী মহিলার এবং শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে ভূমিকা পালন করে থাকে। 

হাঁপানি ও কাশির সমস্যা দূর করে: নিয়মিত খেজুর খেলে হাঁপানি ও কাশির মতো সমস্যা সহজে দূর করা সম্ভব হয় যেসব মহিলা গর্ভবতী রয়েছেন তাদের এরকম সমস্যা থাকলে নিয়মিত খেজুর খেলে এসব সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে: গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে এতে গর্ভবতী মা ও শরীরের পাশাপাশি মন ও বেশ আনন্দময় থাকে যা তার অনাগত সন্তানের সুন্দর গঠন এবং ভবিষ্যতের জন্য অনেক উপকারী হবে।

চুল পড়ার সমস্যা কমায়: গর্ভাবস্থায় দেখা যায় অনেক মহিলাদের চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যার ফলে চুল পড়ার সমস্যা আরেকটা কমে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খেলে চুল পড়া সমস্যা দূর হয়ে যায়।

আরো বলুন: গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভের বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে: খেজুর গল্পের বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকেন। অনেক গর্ভবতী মহিলাই আছেন যাদের গর্ভের বাচ্চার ওজন সহজে বাড়তে চায় না এ নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা ভোগেন। তাই নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে গর্ভে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি হয় এবং শিশুর শারীরিক পুষ্টি বৃত্তিতে ও সহায়ক হয়।

উপসংহার : গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

আজকের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে। আশা করি খেজুর সম্পর্কে আপনাদের অনেক ধারণা হয়েছে। খেজুর অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু একটি ফল। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২ , ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। 

আপনারা যদি নিয়মিত খেজুর খান তাহলে এর থেকে অনেক উপকারিতা পাবেন। নিয়মিত খেজুর খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়, কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়, স্নায়ুতন্ত্রের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলেও গর্ভবতী মায়েদের অনেক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। গর্বে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশেও সাহায্য করে থাকে খেজুর তাই আপনারা নির্দ্বিধায় নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনারা খেজুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন। পোস্ট সম্পর্কিত কোন সমস্যা বা কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

 




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url