শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন


আজকে আমরা শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। কারণ শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা একজন মানুষের জন্য অনেক উপকারী। তাই এর পুষ্টি গুনাগুন এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে সকলের জানা উচিত। 
শসার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কিন্তু এটি কিভাবে খেতে হবে কখন খেতে হবে কি পরিমাণ খেতে হবে এই বিষয়ে আপনাদের ধারণা থাকতে হবে। তা না হলে শসা খাওয়ার উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক শসার উপকারিতা ও অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম এবং এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে

পেজসূচিপত্র:শসার উপকারিতা ও অপকারিতা

শসার উপকারিতা সমূহ

শসার অনেক উপকারিতা রয়েছে। শসা খেলে মিলবে অনেক উপকার। শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, শসার মধ্যে ৯৫% পানি থাকে। যা আপনাদের শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ভিটামিন কে, কপার, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। শসা খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এজন্য আপনাদের নিয়ম করে শসা খাওয়া উচিত চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শসা নিয়মিত খেলে দীর্ঘস্থায়ী কোন রোগের সম্ভাবনা ও কমে যায়। এজন্য বলা হয় শসার উপকারিতা অনেক তাই নিয়মিত শরীর সুস্থ রাখার জন্য আপনি শসা খেতে পারেন।

হাড় মজবুত করে: শসা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। শসাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে। ভিটামিন কে হাড়ের ঝুঁকি কমায় এবং ক্যালসিয়াম শোষণের সাহায্য করে। যার ফলে নিয়মিত শসা খেলে হাড়ের গঠন মজবুত ও শক্ত হয়।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে : শশায় রয়েছে ভিটামিন, খাদ্য আঁস, পানি যা খাবার হজমে সাহায্য করে থাকে। যাদের হজম শক্তি দুর্বল তাদের জন্য শসা অনেক উপকারী সবজি। এছাড়াও প্রতিদিন শসা খেলে শরীরের পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা সহজেই দূর করা যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই শসা খাওয়া উচিত।

আরোপড়ুন: অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা

ওজন কমাতে সাহায্য করে : শসা ওজন কমাতে ব্যাপক ভুমিকা পালন করে থাকে । শসায় প্রচুর পরিমানে পানিও উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকে ,যা দ্রুতহজম করতে সাহায্য করে ।এছাড়াও রয়েছে নিম্নমানের ক্যালোরি যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে ।এই জন্য যারা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত শসা খেতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে : শসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে আশায় রয়েছে ফাইবার এবং ফ্লাইট সমৃদ্ধ উপাদান আমাদের শরীরে পানির পরিমাণ বাড়ায় এতে আরো রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে আরো রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ও ফাইবার যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ দূর করে : শসায় প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফাইবার রয়েছে যা আমাদের শরীর হজম শক্তি বাড়ায়।এতে ফাইবার থাকার কারণে এটি দ্রুত হজমে সাহায্য করে। শসায় এপসির নামক এনজাইম রয়েছে যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, তাই আমাদের নিয়মিত শসা খাওয়া উচিত।

এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করেন : শসা আমাদের শরীরে এসিডিটি দূর করতে ব্যাপক সাহায্য করে থাকে এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের সাহায্য করে থাকে। শসা আমাদের রক্ত পরিষ্কার করে এবং এর পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিক এসিডিটি দূর করার ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।

চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে : শসা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। অনেক সময় আমাদের ঘুম কম হওয়ার কারণে অথবা রাত জাগার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায় আর এ দাগ অপসারণ করার জন্য শসা ব্যবহার করা হয়। শসা গোল গোল করে কেটে চোখের উপরে লাগিয়ে রাখলে চোখের ময়লা দুর হয় এবং এতে চোখের জ্যোতি ও বৃদ্ধিপায়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : শসা ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সহায়তা করে থাকে । শসা মিনারের সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি দাত ও মাড়ির সমস্যা দুর করতে সাহায্য করে থাকে। শসা কিডনি,ইউরিনারি ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায়  কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ।এছাড়া ও শসা স্তন, জরাযু এবং বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমাতে সহায়তা করে।  

মুখের গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে : শশা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। মুখের ভিতরে থাকা বর্জ্য বর্জ  ও টক্সিন দূষিত গন্ধ দূর করতে শসা কার্যকারে ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই চাইলে আপনি নিয়মিত শসা খেতে পারেন। শসা ব্যাকটেরিয়ার সাথে ফা্ইট করে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করেন : শসায় রয়েছে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি ফাইভ, ভিটামিন বি ৭। যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। তাই শসা নিয়মিত খেলে মানসিক চাপ সহজেই কমে যায়। এজন্য আপনি নিয়মিত শসা খেতে পারেন।

দেহে পানি শূন্যতার অভাব পূরণ করে : শসায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। তাই শসা দেহের পানির ঘাটতি পূরনে সাহায্য করে। শসারদ মধ্যে প্রায় 95 ভাগ পানি বিদ্যমান থাকে। কখনো যদি এমন হয় যে আপনি দিনে পানি কম খেয়েছেন তাহলে শসা খেলে আপনার সে ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

কিডনি সুরক্ষা : কিডনির সুরক্ষায় শসা ধারণ ভাবে কাজ করে থাকে। যারা নিয়মিত শসা খায় তাদের শরীরে শসা ইউরিক এসিডের মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে কিডনি থাকে সুস্থ সতেজ এবং কিডনি সুরক্ষা বৃদ্ধি পায়। কিডনি সুরক্ষায় নিয়মিত শসা খেতে পারেন।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে : শসা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কে এর ধমনীতে জমে থাকা এলডিএল হ্রাস করতে সাহায্য করে ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই বিভিন্ন মেডিসিন থেকে বিরত থাকা যায় এবং স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা যায়।

কিডনির পাথর: শশাতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। আর এই পানি আমাদের দেহের বর্জ্য দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলে যেতে সাহায্য করে। ইউরিনারী ব্লাডার লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যার সমাধানে বেশ সহায়তা করে থাকে শসা।

শসার পুষ্টি উপাদান সমূহ

শসাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার কারণে শসার উপকারিতা অনেক। শসা এমন একটা সবজি যা সারা বছরই পাওয়া যায়। এটি খাবার হজমে এবং খাবার রুচি বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয় শসার আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। আর এইসব উপকারিতা শসার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান সমূহের কারণেই হয়ে থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক শসার পুষ্টি  উপাদান সমূহ।

প্রতি ১০০ গ্রাম শশাতে যে পরিমাণ পুস্টি উপাদান রয়েছে তা হলো ১৫ কিলো ক্যালরি, কার্বোহাইডেট ৩.৬৩ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬৫ গ্রাম, খাদ্য আশঁ ০.৫ গ্রাম ,নিয়াসিন ০.০৯৮ গ্রাম,থায়ামিন ০.০২৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১০৫ আই ইউ, ফোলেট ৭ মাইক্রগ্রাম, ভিটামিন সি ২.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ১৬.৪ মাইক্রগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.২৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, জিংক ০. ২০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৪ মিলিগ্রাম এছাড়াও আরো অনেক পুষ্টিকার উপাদান রয়েছেন।


এসব পুস্টি উপাদান আপনার শরীরকে নানা রোগ থেকে যেমন রক্ষা করছে তেমনি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করছে। শসার পুস্টি উপাদান অনেক এবং এর গুণাবলী ও অনেক তাই আপনাদের প্রত্যেকেরই শসা খাওয়া উচিত।

শসা খাওয়ার নিয়ম

শসা বিভিন্ন উপায় খাওয়া যায়, কেউ কাঁচা খেয়ে থাকেন আবার কেউ রান্না করে খেয়ে থাকেন। তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বা কিভাবে খেতে হয়। 

শসা বেশিরভাগ মানুষই কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে থাকেন আবার কিছু কিছু স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ রয়েছেন যারা সালাদ হিসাবে শসা খেয়ে থাকেন। শসা ওজন কমানো থেকে শুরু করে শরীর ঠান্ডা রাখতে, শরীরের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন কে ভিটামিন সি এবং পাশাপাশি আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং ফাইবার রয়েছে।

শসা খাওয়ার আগে শসা ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে এবং গোল গোল করে কেটে নিয়ে খেতে পারেন। অনেকেই আছেন শসার ত্বক বা খোঁসা খেতে পছন্দ করেন না তারা শসার খোসা ছিলে নিয়ে খেতে হবে তবে অনেক চিকিৎসকরা বলেন শসার খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য শসা খোসা সহ খাওয়া যায় বা খেতে পারেন। 

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, হাফ কাপ বা ছোট একটি শশাই রয়েছে ১.৯ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ০.৩ গ্রাম ফাইবার, ০.৩ গ্রাম প্রোটিন। তাই দিনে আপনার জন্য একটি শসায় যথেস্ট।

ওজন কমাতে শসার ভূমিকা

ওজন কমাতে শসা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। শসার উপকারিতা ও অনেক শসার পুষ্টি গুনাগুলো অনেক,শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। শসা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি হিসেবে পরিচিত। তাই আমরা অনেকেই নিয়মিত শসা খাই এবং কেউ কেউ ওজন কমাতে এবং ডায়েট কন্ট্রোল করার জন্য শসা খেয়ে থাকি।

শসার উপকারিতা প্রশ্ন করলে সবার মাথায় প্রথমে যে বিষয়টা আসে সেটা হচ্ছে শসা ওজন কমাতে সাহায্য করে । শসায় প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ফাইবার এবং পানি রয়েছেন এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন অনেক বেশি যার কারণে শসা খেলে আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে এবং ক্ষুধা রোধ হয়। ফলে খাবার রুচি অনেক কমে যায়।

শসা আপনাদের শরীরের ওজন হ্রাস এর মাধ্যমে শরীরের মেটাবলিক রেট বাড়াই। একটা মিডিয়াম সাইজের শসার প্রায় ২৪ কিলো ক্যালরি থাকে যা লো ডেনসিটি ফুড বানাই। তাই প্রতিদিন আপনি ডায়েটে শসা রাখলে আপনার শরীরের ওজন হ্রাস এ সহায়ক হবে।

শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সশার ভূমিকা

শসা শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এগুলো খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। শসার অনেক পুষ্টি গুনাগুনের কারণে শসা শরীরের ত্বকের অনেক উপকার করে থাকে। শসায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং মিনারেল সমৃদ্ধ থাকাই এটি ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। শসা ত্বক সুন্দর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা রাত জেগে কাজ করেন অথবা নাইট ডিউটি করেন বা ঘুম না হওয়ার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়, যাকে বলা হয় ডার্ক সার্কেল। অনেকেই এই ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য বিভিন্ন নামি দামি ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই জানেন না ডার্ক সার্কেল পরিষ্কার করতে শসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শসা গোল গোল চাকার মত করে কেটে চোখের উপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট দিয়ে শুয়ে থাকুন এভাবে সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার করুন দেখবেন আপনার চোখের নিচে কালো দাগ আস্তে আস্তে দূর হয়ে গেছে।

শসায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং মিনারেল রয়েছেন যা আমাদের ত্বক এবং নখের জন্য অনেক ভালো কাজ করে। যারা বড় বড় নখ রাখতে চান এবং সুন্দর করে রাখতে চান তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।তাই আপনারা চাইলে শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য শসা ব্যবহার করতে পারেন।

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। শসা অনেকে অনেক ভাবে খেয়ে থাকেন কেউ ভরা পেটে খেয়ে থাকেন আবার কেউ খালি পেটে খেয়ে থাকেন। যে যেভাবে শসা খেয়ে থাকেন না কেন এর উপকারিতা ও রয়েছে এবং অপকারিতা ও রয়েছে। তাই এর উপকারিতা দিকটি জেনেই শসা খাওয়া উচিত। অনেকে আছেন যারা খালি পেটে শসা খেয়ে থাকেন, তবে খালি পেটে শসা না খেয়ে শসা জুস করে খাওয়া অনেক উপকারী। সকালে খালি পেটে শসার রস এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে জুস করে খেলে তা ওজন কমাতে সহায়তা করে।

তবে সকালে খালি পেটে অন্যান্য অনেক উপাদানের সাথে মিশিয়ে শসা সালাদ বানিয়ে খাওয়া যায়, কিন্তু সকালে নাস্তা বা খাবার না খেয়ে শুধু শসা খেলে তা আপনাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতি হতে পারে। যেমন ব্লাড প্রেসারের জন্যই এটা অনেকটাই দায়ী হতে পারে। অনেকেই আছেন যারা লো প্রেসারে ভুকছেন তারা যদি এই নিয়মে শসা খেতে থাকেন তাহলে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই তাদের এই নিয়মে শসা খাওয়া উচিত নয় বরং কোন খাবারের সাথে মিশেই বা সালাত বানিয়ে খাবারের অন্য কোন খাবারের সাথে খাওয়া উচিত। এতে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না বরং এর থেকে অনেক উপকার পাবেন।

শসা যেহেতু ওজন কমাতে সহায়তা করে সেহেতু খাবার পূর্বে অর্থাৎ দুপুরে এবং রাতে খাবারের ৩০ মিনিট পূর্বে শসা খেতে পারেন এতে শরীরে অনেক উপকার হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসার উপকারিতা অনেক যার কারণে আপনারা অনেকেই শসা খেয়ে থাকেন যেকোনো সময়। শসা কেউ সবজি হিসেবে খেয়ে থাকেন আবার কেউ এমনিতেই চিবিয়ে খেয়ে থাকেন আবার কেউ  সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকেন। শসা এমন একটা সবজি যে খাবার হজমে সাহায্য করে কিন্তু শসা নিজেই হজম হতে অনেক সময় লাগে। 

আরোপড়ুন: অ্যালোভেরা খাওয়ার নিয়ম

শসা খাওয়ার আগে শশাটি ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে এরপর কিছু অংশ কেটে নিতে হবে। শসার ওপরে ত্বকটি কেউ যদি খেতে না চান তাহলে উপরের ত্বক বা খোসা ছেলে ফেলতে হবে। তবে চিকিৎসকরা বলে থাকেন শসার তকে বা খোসায় ফাইবার রয়েছে যাও আপনাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী

রাতে ঘুমানোর আগে শসা খাওয়া উচিত নয় খেতে হলে আপনাকে সন্ধ্যার দিকে সালাদ বানিয়ে খেতে হবে অথবা রাতে খাবারের আধা ঘন্টা এক ঘন্টা আগে শসা গোল গোল করে কেটে নিয়ে খেতে পারেন। এতে করে রাতে ডিনার কম হবে এবং শরীরের মেদ জমবে না কম ক্যালরি গ্রহণ করার ফলে। 

ঘুমানোর আগে ডিনার বা অন্যান্য খাবার গ্রহণ করার জন্য উচিত নয় তেমনি শসা খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু দুই তিন ঘন্টা আগে শসা খেতে পারেন যাদের হজম শক্তি ভাল ।

শসার রস বা জুসের উপকারিতা

শসায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এর জন্য এর উপকারিতা ও অনেক। শসা যেভাবে খেয়ে থাকেন না কেন এর অপকারীতার তার চেয়ে এর উপকারিতায় অনেক বেশি ।তাই এক একজন এক এক ভাবে শসা খেয়ে থাকেন। তবে শসা রস বা জুস করে খেলে এর কিছু উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। এর উপকারিতা গুলো হল

  • শসা রস বা চোষ করে খেলে শসার রস আলসার গ্যাস্ট্রিক এসিডিটির ক্ষেত্রে অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে
  • শসা রস করে খেলে শসায় বিদ্যমান মিনারেল শরীরের ফ্লুইড  ব্যালেন্স ঠিক করতে সহায়তা করে থাকে তাই শসা জুস করে খাওয়া অনেক উপকারি।
  • শসার রস চুল ঘন এবং মজবুত করতে সহায়তা করে তাই নিয়মিত শসা জুস বানিয়ে খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় ।
  • শসা জুস বানিয়ে খেলে শশায় থাকা পটাশিয়াম এর ব্যালেন্স এর নিশ্চয়তা এবং হাই ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করতে শসা অনেক ভূমিকা পালন করে ।
  • অনেক সময় অনেক মানুষেরই শরীরে গেটেবাথ এর  সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত শসার রস এবং গাজরের রস খেলে এর সমস্যা সহজে দূর করা যায়।

শসার খাওয়ার অপকারিতা 

শসা খেলে যেমন এর উপকার আছে তেমনি এর অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায়। আমরা অনেকেই আছি যারা শসা খাওয়ার উপকারিতার কথাই জানি কিন্তু এর অপকারিতার কথা জানিনা। যারা শসা খাবার অপকারিতা সম্পর্কে জানিনা চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক শসা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ 

শসা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার বা লো ক্যালোরিযুক্ত খাবার বলা হয়। শসার মধ্যে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে । বলা যায় শসার ৯৫ ভাগই পানি থাকে। শসা একটি ভালো মানের এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার। তাই এটি শরীরের উপকারের পাশাপাশি এটি অপকারও করে থাকে।

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ওজন নিয়ে খুব টেনশন করেন কিন্তু অনেকেই আছেন ডায়েট কন্ট্রোল করার জন্য শসা খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ আবার তাদের শরীরে ওজন কমানোর জন্য ক্ষুধা পেলে অন্য খাবারে পরিবর্তে শুধু শসা খেয়েই দিন পার করে দিতে চান। এমনটা করা যাবে না কারণ শসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং লো ক্যালোরি যুক্ত খাবার হওয়ার কারণে আপনার শরীরের ওজন কমলেও অন্যান্য খাবার বন্ধ হওয়ার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং পুষ্টি  উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

আর  আপনি যদি টানা এক মাস ওজন কমানোর জন্য শসা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে গ্লোকুজের  মাত্রা একেবারে কমিয়ে দেবে এবং শরীরকে একেবারে দুর্বল করে দেবে। তাই ডায়েট কন্ট্রোল করার জন্য বা আপনার শরীরের ওজন কমানোর জন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি আপনি শসা রাখতে পারেন।

আবার অনেকেই সারাদিন প্রচুর পরিমাণে সসা খেয়ে থাকেন এর ফলে অনেক সমস্যা হয়ে থাকে যেমন পেটে ব্যথা, বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব এরকম নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর সমূহ 

১। শসা খেলে কি প্রেসার বাড়ে? 

উত্তর: চিকিৎসকবিদরা বলেন নিয়মিত শসা খেলে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমে সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এমনকি শসা উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। 

২। প্রতিদিন কতটুকু শসা খাওয়া উচিত? 

উত্তর: শসা খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম কানুন নেই তবে শসা পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে আপনি প্রতিদিন একটি শসা খেতে পারেন।

৩। শসায় কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে? 

উত্তর: শশায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো হল ১৫ গ্রাম কিলো ক্যালরি, ০.৬৫ গ্রাম প্রোটিন, খাদ্য আশঁ ০.৫ গ্রাম, নিয়াসিন ০.০ ৯৮ গ্রাম, থায়ামিন ০.০২৭ মিলিগ্রাম এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে ছাড়াও আরো অনেক সৃষ্ট উপাদান রয়েছে।

৪। শসা বেশি খেলে কি হয়? 

উত্তর: শসা বেশি খেলে আপনার শরীরে অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন, বদহজম, গ্যাসের সমস্যা, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা ,বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। শসা বেশি পরিমাণে খেলে শরীর পর্যন্ত পুষ্টির অভাবে  ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে এবং অনেক পুষ্টির অভাব দেখা দিবে।

উপসংহার

তাহলে আজকের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। আরো জানতে পারলেন শসা খাওয়ার নিয়ম, ওজন কমাতে শসার ভূমিকা ,খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা, রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা, শসার জুস খাওয়ার উপকারিতা। শসা আপনাদের জন্য অনেক উপকারী বিশেষ করে যারা ডায়েট কন্ট্রোল করছেন তাদের জন্য এবং যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য ও। 

কোন ব্যক্তি যদি নিয়ম করেন প্রতিদিন একটি শসা খায় তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কারণ শসার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি গুনাগুন। তাই আপনারা চেষ্টা করবেন প্রতিদিন অন্তত একটি শসা খাওয়ার। যদি খেতে পারেন তবে এর থেকে অনেক উপকৃত হবেন ।

আজকের পোস্টটি আপনাদের কেমন লাগলো, যদি ভালো লাগে বা যদি ভালো না লাগে অথবা পোস্ট সম্পর্কিত যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন। আমাদের এই সাইটে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন তথ্যমূলক পোস্ট পাবলিশ করা হয় তাই এরকম তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url