ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা-ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই আছেন যারা এখনো ইসবগুলের ভুষি কি ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা কি, খেলে কি
হয়, কিভাবে খেতে হয় এসব বিষয়গুলো জানিনা। এগুলো জানার জন্য চলুন আজকেরে
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিই।
পেজ সূচিপত্র: ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা
- ইসবগুলের ভুসি কি
- ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা সমূহ
- ইসবগুলের ভুসির অপকারিতা সমুহ
- ইসবগুলের ভুসির পুষ্টিগুন
- ইসবগুলের ভুসির খাওয়ার নিয়ম
- ওজনকমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসিখাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
- খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়
- উপসংহার
ইসুবগুলের ভুষি কি:
চলুন জেনে নেওয়া যাক ইসুবগুলের ভুষি সম্পর্কে । ইসবগুলের ভুষির বৈজ্ঞানিক নাম
হচ্ছে প্ল্যান্টাগো ওভাটা (plantago ovata) । এর আদিবাস হলো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে
এটি আদ্রতা পূর্ণ স্থানে ভালো জন্মে। ইসবগুলের ভুষি প্ল্যান্টাগো ওভাটা নামক এক
ধরনের বীজ থেকে সংগ্রহ করা হয় এটি আমাদের দেশে ইসবগুলের ভূষি নামে বহুল পরিচিত।
বিদেশীরা এটিকে স্পাভোলা ফ্লিমাছি বা সাইলিয়াম নামে চিনে থাকে ফ্লি-মাসি বলার
অন্যতম কারণ হলো এটি দেখতে কিছু টা গ্রিক মাছির মতো তাই এটাকে ফ্লি-মাছি বলা হয়।
ইসবগুলের ভুষি যে বীজ থেকে সংগ্রহ করা হয় তা দেখতে অনেকটা নৌকোর মত। এটি সাধারণত
রবিশস্য হিসেবে পরিচিত। ইসবগুলের ভুষি যখন খাবার উপযুক্ত হয় তখন এটি ফাইবারের
রূপ নেই যা সাধারনত আরে চোখ আরে হিসেবে কাজ করে। আর এই ইসবগুলকে বাল্ক ফরমিং
লক্সিটিভ বলা হয়ে থাকে।
ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা সমুহ:
ইসবগুলের ভুষির গুরুত্ব অপরিসীম। ইসুবগুলের ভুষির অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমরা
অনেকেই উপকারী খাদ্য হিসেবে ইসবগুলের ভুষি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখি । কেননা
এটি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ছোট-বড় অনেক অসুখের সমাধান মেলে এই
ইসবগুল খেলে। ইসুবগুলে রয়েছে অনেকগুলো পুস্টি উপাদান এ সব উপাদান আমাদের শরীরের
বিভিন্ন উপকার করে থাকে। ইসবগুলের ভুষি থেকে উপকার পেতে হলে নিয়মিত খাদ্য
তালিকায় ইসবগুলের ভুষি রাখুন এবং নিয়ম করে প্রতিদিন দুইবার ইসবগুলের ভুষির খান।
তাহলে এর থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। চলুন জেনে নেয়া যাক ইসবগুলের ভুষির
বিশেষ কিছু উপকারিতা সমূহ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে:
মানব শরীরের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য একটি মারাত্মক রোগ। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দেখা দিলে
শরীরর ভেতরের স্বাভাবিক নানা ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ফলে এর বিরূপ
প্রতিক্রিয়া পড়ে পুরো শরীরের উপর। এই রোগের সমাধান পেতে ইসবগুলের ভুষি
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসবগুলে রয়েছে দ্রবণীয় ও অদ্রবনীয় খাদ্য আঁশ যা
কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব ভালো ঘরোয়া উপায় হিসেবে কাজ করে।ইসবগুলের ভুষি
পাকস্থলিতে গিয়ে ফুলে ভেতরে সব বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
এটি পরিপাকতন্ত্রে গিয়ে পানি শোষণ করে মলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে
সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে প্রতিদিন রাত্রে
দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে অথবা কুসুম গরম দুধের
সাথে গুলিয়ে খেতে পারেন।
এসিডিটির সমস্যা:
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ যে এসিডিটির সমস্যা রয়েছে আর এই এসিডিটির সমস্যা
সাধারণত ভুলভাল খাদ্য অভ্যাস এর বড় কারণ। এসিডিটি সমস্যা দূরীকরণের অন্যতম একটি
ঘরোয়া উপায় হচ্ছে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া। ইসুবগুলের ভুষি পাকস্তলির ভিতরে ভেতরে
দেয়ালে একটা প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে যে কারণে এ্যাসিডিটির বান থেকে
পাকস্থলীর কে রক্ষা করে। ইসবগুল হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্তলির বিভিন্ন এসিড
নিঃসরণে সাহায্য করে।
এ্যাসিডিটি সমস্যা দূর করার জন্য সকালে ও রাত্রে ২ চা চামচ ইসবগুল ঠান্ডা দুধের
সাথে বা পানির সাথে গুলিয়ে পান করুন। এভাবে নিয়মিত খেলে এ্যাসিডিটির সমস্যা দূর
করা সম্ভব।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে:
ইসবগুল শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের ব্যবহার করা হয় না বরং ডায়রিয়া প্রতিরোধও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়রিয়া প্রতিরোধ করার জন্য এসব গুণদের সাথে
মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। কারণ হয়ে থাকে প্রো বায়োটিকযা
পাকিস্তানের ইনফেকশন সারাতে কাজ করে এবং এসব ভুল তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে
ফলে খুব কম সময়ে ডায়রিয়া রোগ সেরে যায়। ডায়রিয়া প্রতিরোধে 24 চামচ এসব গোল
তিন চাচা দইয়ের সাথে মিশিয়ে দিনে দুবার খেতে পারেন । এভাবে খেলে দ্রুত ফলাফল
পাওয়া যাবে।
হার্ট ভালো রাখতে:
হার্ট ভালো রাখতে ইসবগুলের উপকারিতা অপরিসীম। তাই নিয়মিত হার্ট ভালো রাখার জন্য
এসব গোল খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন এই সবগুলি রয়েছে খাদ্য আর যা কোলেস্টেরলের
মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে। এটি পাকিস্তানের দালালের পাতলা স্তরের
সৃষ্টি করে যা কলেজের মাত্রা বাগানে এবং রক্তের শ্রীরাম কোলেস্টেরলের মাথা কমিয়ে
দেই। এছাড়াও এটি রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে দিতে কাজ করে ফলে দমনীতে
ধমনীতে ব্লক সৃষ্টি হতে পারে না।
ওজন কমাতে:
ওজন কমাতে এসব গুলের উপকারিতা অনেক। এসব ভুল খেলে অনেক সময় পেট ভরা থাকে ফলে
অন্য কোন খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায় এসব ভুল কোল কোন পরিস্কারক হিসেবে কাজ
করেন, এটি পাকিস্তানের বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, হজম প্রক্রিয়াকে
আরো বেশি কার্যকর করে শরীরকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে। ইসবগুল কুসুম গরম
পানিতে দুই চা চামচ অসামান্য লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ভাত খাওয়ার আগ মুহূর্তে এটি
খেতে পারেন আবার পরেও খেতে পারেন সকলে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেলেও এটি ওজন
কমাতে সাহায্য করেন।
হজমে সাহায্য :
ইসবগুল হজম প্রক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসব ইসবগুলে থাকা দ্রবণীয়
ও দ্রবণে খাদ্য আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। ইসবগুল পাকস্থলির
বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে হলে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে এবং হজম
প্রক্রিয়া উন্নত হয় তাই হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে নিয়মিতভাবে ইসবগুল খেতে
পারেন তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে ইসবগুল ভিজিয়ে না রেখে দিয়ে কিছু সময়
ভিজিয়ে সাথে সাথে খেয়ে ফেলতে হবে তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে:
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ইসবগুলের উপকারিত অনেক। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য
ইসব গুল অনেক উপকারী। এটি পাকস্থলীতে গিয়ে জেলির মত একটা পদার্থের রূপ নেই যা
গ্লুকোজের ভাঙন ও শোষণের গতিকে ধীর করে। যার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকেন।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে চাইলে নিয়মিত ভাবে দুধ বা পানির সাথে ইসবগুল মিশিয়ে
পান করুন।
ইসবগুলের ভূসির অপকারিতা সমূহ:
সব কিছুরই যেমন উপকারীতা রয়েছে তেমনি এই কিছু অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায় ঠিক
তেমনি ভাবে ইসবগুলের ও কিছু অপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি নিয়মিত ইসবগুল খেয়ে
থাকেন আর নিয়মিত মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে থাকেন তাহলে এর অনেক অপকারিতা লক্ষ্য করা
যায়। ইসবগুল বেশি পরিমাণে খেলে অনেকের সহ্য করতে পারে না যার কারণে পেটে ব্যথা
হবার সম্ভাবনা থাকে আবার গ্যাস্ট্রিকের ও সমস্যা করে। বিশেষ করে যাদের এলার্জির
সমস্যা রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ইসুবগুলের ভুসি খাবেন তা না হলে অনেক
সমস্যা হতে পারে
অনেকে আছেন ইসবগুল সহ্য করতে পারেন না যার কারণে বমি বমি ভাব হয় এমনকি বমি হতে
পারে। আবার কেউ কেউ আছেন যাদের হজম শক্তি কম তারা ইসবগুলের ভুষি খেলে হজমের
সমস্যা হয়, এমনকি ডাইরিয়া জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাগুলো ছাড়া
ইসবগুল খেলে আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন-
- চুলকানির সমস্যা
- শরীরের লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে
- মুখ ও গলা ফুলে যেতে পারে
- শ্বাসকষ্টরোগ হতে পারে
ইসবগুলের ভুসির পুষ্টিগুণ:
ইসবগুল হল এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার যা প্ল্যানটাগো ওভাটা বা সাইলিয়াম বীজের
খোসা। এটি রেচক বা লিখজেটিভ হিসাবেও পরিচিত। ইসবগুল মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী
একটি উপাদান। ইসবগুল মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হার্ট, হৃদপিণ্ড, এবং অগ্নাশয়
সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ইসবগুলের অনেকগুলো পুস্টি উপাদান রয়েছে,
যেগুলো আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। ইসুবগুলের ভুষির পুস্টিগুলো হলো
এক টেবিল চা চামচ ইসবগুলে ৫৩ শতাংশ ক্যালরি, 15 মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ০ শতাংশ ফ্যাট, 15 গ্রাম শর্করা, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৯ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এই পুস্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে উপকার করে থাকে তাই ইসুবগুলের ভুষি যে কোন বয়সের মানুষ খেতে পারেন তাহলে এর থেকে যথেষ্ট উপকার পাবেন।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম:
প্রথমে আমাদের যে বিষয়টা জানতে হবে সেটা হচ্ছে ইসবগুলের কি এবং এই ইসুবগুলের ভুষি
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। কেননা ইসবগুলের ভুসি থেকে উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই
নিয়ম মেনে ইসবগুলের ভুষি খেতে হবে। যেকোনো খাবারই নিয়ম মেনে খেলে এর থেকে অনেক
উপকারিতা পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ইসুবগুলের ভুষি ও তাই। তাই আমাদের প্রতিদিন ৫
থেকে ১০ গ্রাম ইসবগুলের ভুষি খেতে হবে এর বেশি খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। এমনকি
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েও ইসুবগুল খেতে পারেন যাতে কোন সমস্যা না হয়।
ইসবগুলের ভুসি সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে খেলে সবচেয়ে বেশি ফল
পাওয়া যায়। হালকা ঠান্ডা পানিতে অথবা কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচি ইসবগুলের
ভুষি ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এরপর এটি খেয়ে নিন। তাহলে এর থেকে বেশি
উপকৃত হওয়া যাবে। তবে ইসবগুলের ভুষি অতিরিক্ত সময় ধরে ভিজিয়ে রাখবেন না তা হলে
ইসবগুলের ভুষির গুণগতমান ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে। এভাবে ইসবগুলের ভুষি নিয়ম করে
খেতে হবে।
আবার অনেকে আছেন ডায়েট কন্ট্রোল করার জন্য বা ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইসবগুলের
ভুষি খেয়ে থাকেন। তাদের ক্ষেত্রেে ইসবগুলেরব ভূসি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ চা
চামচ ইসবগুলের ভুষির সাথে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন
তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আপনার ওজন কমাতে পারবেন। এটি ডায়রিয়া প্রতিরোধ অনেক
উপকারী। যাদের ডায়রিয়া হয়েছে তারা এর থেকে উপকারিতা পাবার জন্য ইসবগুলের ভুষির
সাথে দই মিক্সড করে খেতে পারেন তাহলে আপনার ডায়রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
কেননা দইয়ের সাথে ইসবগুলের ভুষি মিক্সড করে খেলে ডায়রিয়া রোগ ভালো হয়ে যায়।
তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত ইসবগুলের ভুসি নিয়ম করে খাওয়া।
ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম:
আপনারা যারা ওজন কমাতে আগ্রহী এবং কি খেলে সহজে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায় বা পেটের
মেদ কমানো যায় এই নিয়ে অনেক চিন্তিত। তারা নিঃসন্দেহে ওজন কমাতে ইসুবগুলের ভুষি
খেতে পারেন। কেননা ইসবগুলের ভুষি ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে । ইসবগুল
আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সহায়তা করে সহজেই শরীরের ওজন কমে যায়। ইসবগুল
ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের ব্যাপক ভূমিকা পালন করে ।ইসবগুলের ভুসি পাকস্থলি
পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ।
ফলে সহজেই পাকস্থলীতে চর্বি জমতে পারে না যার ফলে সহজেই শরীরের ওজন কমানো যায়।
শরীরের ওজন কমানোর জন্য ইসবগুলের ভুসি যেভাবে খাবেন সেটি হচ্ছে প্রতিদিন সকালে
খালি পেটে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ও দুই চা চামচ লেবুর রস ঠান্ডা পানিতে
মিশিয়ে বা কুসুম গরম পানিতে মিক্সড করে খেতে পারেন। এটা আপনার শরীরে ওজন কমতে
সহায়তা করবে। ইসবগুলের ভুষিতে মোটা হওয়ার কোন উপাদান নেই যার কারণে এটি সহজেই
ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
ইসুবগুলের ভুষি আপনি রাত্রে ঘুমানোর আগ মুহূর্তেও খেতে পারেন। ইসবগুল পানিতে
মিশিয়ে অথবা হালকা কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে সাথে লেবুর রস নিয়ে ঘুমানোর আগে
খেয়ে নিতে পারেন তাহলে সকালবেলায় আপনার বাথরুম ভালো হবে এবং পেট পরিষ্কার হবে
ফলে পেটে সহজে চর্বি জমতে পারবে না যার কোন পেট অনেক হালকা হয়ে যায়। ইসবগুল
ইসুবগুলের ভুষিতে যে সকল উপাদান রয়েছে তাতে শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে ওজন
বাড়াতে নয় ।তাই আপনি আপনার ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খেতে
পারেন।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসিখাওয়ার উপকারিতা:
গর্ভাবস্থায় ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। গর্ভাবস্থায়ী ইসবগুলের ভুষি
খেলে পেট ক্লিয়ার থাকে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়। ইসবগুল অনেক উপকারী খাদ্য হিসেবে
পরিচিত। এটি নিয়মিত খেলে ছোট বড় অনেক অসুখের সমাধান পাওয়া যায়। ইসবগুলের ভুষি
থেকে উপকার পেতে হলে প্রতিদিন দুইবার করে এসব গুলের ভুষি খান তাহলে এর উপকারিতা
পাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থায়ী ইসুবগুলের ভুষি খেলে এর কিছু উপকারিতা লক্ষ্য করা
যায় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো
প্রসাবের জ্বালাপোড়া: অনেক সাধারন মানুষ তথা গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাটি দেখা
যায়।ইসুবগুলের ভুষি নিয়মিত খেলে প্রসবের জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
অনেক সময় দেখা যায় যে মানব শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য একটা মারাত্মক সমস্যা এই সমস্যা
হলে শরীরের ভেতরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে যার প্রতিক্রিয়া
পুরো শরীর এর উপরে পড়ে। ইসবগুলের ভূষিতে দ্রবণীয় ও অদ্রবনীয় বিভিন্ন খাদ্য আঁশ্
রয়েছে যা পাকস্তালিতে ফুলে গিয়ে পাকস্থলির বর্জ্য পদার্থ বের করতে সহায়তা
করেন।
ফলে সহজে কোষ্ঠকাঠিন্য তথা প্রসবের জ্বালাপোড়া রোধে ও সাহায্য করে থাকে।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া, প্রসাবে ইনফেকশন সহ নানা
রকমের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। নিয়মিত ইসুবগুলের ভুষি খেলে এই শারীরিক জটিলতা
গুলো দূর হয়ে যায়।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা: অনেক সময় দেখা যায় গর্ভবতী মহিলাদের রক্তে
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় এবং হার্টের অনেক সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে নিয়মিত
ইসুবগুলের ভুষি খেলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের রক্তের কোলেস্টের মাত্রা কমে
যায। যার ফলে হার্ট ভালো ভালো রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও
ইসবগুলের ভুষি ভাস্কুলার সিস্টেমের রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কষ্ট কাঠিন্য একটি অন্যতম রোগ।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দেখা দিলে শরীরের ভেতরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধা গ্রস্থ হয়ে
পড়ে এর ফলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। এ রোগের সমাধান পেতে ইসুবগুলের ভুষি
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসবগুলের ভুষিতে দ্রবণীয় অগ্দ্রবনীয় খাদ্য
উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলীতে গিয়ে ফুলে পাকস্থলির বর্জ্য পদার্থ বের করতে
সহায়তা করে। ফলে সহজে কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ দূর করা যায়। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে
দুইবার ইসুবগুলের ভুষি খাওয়া উচিত।
গর্ভের শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা: ইসবগুলের ভুষিতে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান
রয়েছে। তাই এটি শুধু বিভিন্ন সমস্যার জন্যই নয় গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধিতে এবং
শিশুর বিকাশে সহায়তা করে থাকে। এজন্য গর্ভাবস্থায়ী ইসবগুলের ভুষি খাওয়া উচিত।
কারণ এ সময়ের খাবারে পুষ্টির পর্যাপ্ততা পূরণ করতে ইসবগুলের ভুষি খুবই কার্যকর।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা: গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদেরই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে
থাকে। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় অতিরিক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া খাওয়ার ফলে এসিডিটির
ফলে বার্ন এর ফলে পাকস্থলী থেকে বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে বাধাগ্রস্ত হয়। ইসবগুলের
ভুষি নিয়মিত খেলে এসবগুলো বসে পাকস্থলির ভেতরের দেয়ালে প্রতিরক্ষামূলক কাজ করে
এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। তাই গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুষি অনেক
গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান।
গর্ভাবস্থায় ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম:
- গর্ভাবস্থায়ী ইসবগুলের ঘুসি কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন আপনারা চাইলে এক থেকে দুই চা চামচ ইসুবগুলের ভুষি এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মিশেও খেতে পারেন তাহলে শরীরে অনেক উপকার হবে।গর্ভাবস্থায় ইসুবগুলের ভুষি কুসুম গরম পানি বা দুধের সাথে কিছু মিষ্টি ভাব আনার জন্য এর সাথে মধু মিশেও খেতে পারেন তবে অবশ্যই চিনি দিয়ে খাওয়া উচিত নয় ।
- গর্ভাবস্থায় সবগুলো ভুষি খাওয়ার উপকারিতা যথাযথ ভাবে পেতে হলে খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করুন। খালি পেটে ইসুবগুলের ভুষি খেলে গ্যাস্টিকের মতো সমস্যা থাকলে খুব তাড়াতাড়ি এটা দূর হয়ে যায়।
- গর্ভাবস্থায় আখের রসের সাথে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কোন সমস্যা থাকলে সহযোগিতা দূর হয়ে যাবেন এবং সমস্যা দূর হয়ে গেলে আবার ঠান্ডা পানি অথবা দুধের সাথে মিশিয়ে এসব গুলো বুঝি খেতে থাকুন
- গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের ডায়রিয়া জড়িত সমস্যা হলে ২-৪ চা চামচ ইসুবগুলের ভুষি সাথে টক দই মিশিয়ে খেতে পারেন। ইসুবগুলের ভুষি ডায়রিয়াজনিত সমস্যাই প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। তাই ডায়রিয়াজনিত সমস্যায় এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সাতটা
- গর্ভাবস্থায়ী ইসবগুলের ভুষি যে কোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাবেন না এতে শরীরে অনেক ক্ষতি হতে পারে যেমন ভাতের সাথে মিশিয়ে এসব গুলোর ভুসি খাবেন না।
- গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অভ্যাস করুন কেননা এসব ভুলের বুঝি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে ফলে হার্ট সুস্থ ও সরল থাকে যার কারণে ধমনীতে ব্লক সৃষ্টি হতে পারে না।
- গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাদের ওজন অনেক বেড়ে যায় তাই ওজন কমানোর জন্য ইসুবগুলের ভুষি খেতে পারেন। ইসবগুলের ভুষি খেলে অনেক সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে যা অন্য কোন খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায় যার কারণে ওজন কমানো সহজ হয়ে যায়।
- গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে তারাও নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন তাহলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের সমস্যা অনেকটা কমে যায়।
খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয়:
ইসবগুলের ভুসি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। ইসবগুল ভুসি খেলে
আমাদের শরীরের হার্ট, হৃদপিণ্ড, অগ্নাশয়, পাকস্থলী ভালো থাকে। যার কারনে আমাদের
শরীরে অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্ত থাকে। ইসবগুল অনেকে অনেক ভাবেই চেয়ে থাকেন কেউ
ভরা পেটে খেয়ে থাকেন আবার কেউ খালি পেটে খেয়ে থাকেন । তবে যেভাবে খেয়ে থাকেন
না কেন এটি খেলে আমাদের শরীরে অনেক উপকার হয়। অনেক মানুষ আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন এবং লজ্জায় কাউকে বলতে পারছেন না যে, কি করবেন,কি ওষুধ
খাবেন তাদের ক্ষেত্রে ইসবগুলের ভুষি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
কেননা আপনি যদি প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ২০ থেকে
৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের সমস্যা
থেকে রেহাই পাবেন। শুধু তাই নয় আপনি রাত্রে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতে
দুই -তিন চামচ ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে অথবা হালকা গরম দুধের সাথে মিশিয়ও খেতে
পারেন,তাহলে আপনার শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ, হজমে সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা,এমনকি পাকস্থলির বিভিন্ন সমস্যা সহজেই দূর করতে পারবেন
উপসংহার
ইসবগুলের ভুষির মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক ঔষধি গুনাগুন যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক
উপকারী।ইসবগুলের ভুষি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা
করে। যার কারণে এসব ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক এবং ইসবগুলের ভুষির
নিয়ম করে খেলে এর থেকে অনেক উপকারিতা হওয়া যায়। তাই আমরা এই আর্টিকেলটিতে
ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে ইসবগুলের ভুসি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পারবেন এবং জেনে অনেক উপকারিতা হবেন। আশা করি পোস্টটি মনোযোগ সহকার পড়েছেন এবং
ইসবগুলের ভুষি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এর উপকারিতা অপকারিতা খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং পড়তে
উদ্বুদ্ধ করুন। এই ধরনের আরো পোস্ট বা আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত আমাদের
ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন
রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url