সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা

সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকায় সজনে পাতার উপকারিতা সমূহ অনেক এবং ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা অনেকেই সজনে পাতা এবং সজনে ডাটা খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা জানি না যে এর পুষ্টি গুনাগুন এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সজনের উপকারিতা এবং এর গুনাগুন সম্পর্কে জানা ।
 সজনে পাতার পুষ্টিগুণ উপকারিতা,অপকারিতা,গুণাবলী সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি জানতে পারবেন সজনে পাতা কি সজনে পাতার গুণাবলী, সজনে পাতার উপকারিতা সমূহ । আর আপনি সজনে পাতা সম্পর্কে জানতে পারলে অনেক উপকৃত হবেন।

পেজ সূচিপত্র: সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

সজনে কি :সজনে পাতার উপকারিতা সমূহ

সজনের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ( moringa oleifera)। Moringaceae পরিবারে moringa গনের একটা বৃক্ষ জাতীয় গাছ। সজনে গাছ গ্রীষ্ম প্রধান অঞ্চলের একটা উদ্ভিদ। এটি বীজ ও ডালের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে থাকে। তবে আমাদের দেশে ডালের মাধ্যমে বা অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয় বেশি। সজিনা পাতার অনেক পুষ্টিগুণ থাকায় গবেষকরা সজিনা পাতা কে বলে থাকেন নিউট্রিশনস সুপার ফুড এবং এর গাছকে বলা হয় মিরাকেল ট্রি।

সজনে পাতার উপকারিতা সমূহ: 

সজনে পাতার উপকারিতা অনেক। সজনে গাছের অনেক গুনাগুন রয়েছে যার কারনে, সজনে পাতা ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রমতে, ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। সজনে পাতা, সজনে গাছের মূল, কাণ্ড ,ফল, ফুল, বিজ এমনকি এর আঠাতেও প্রচুর পরিমাণে ঔষধি  গুণাগুণ রয়েছে।সজনে পাতায় প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম আয়রন ও ভিটামিন-সি রয়েছে ।যা স্বাস্থের জন্য অনেক উপকারি । চলুন জেনে নেয়া যাক সজনে পাতার উপকারিতা সমূহ: 

আরোপড়ুন: কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান- ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ,ইত্যাদি থাকে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যে সকল পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন সজনে পাতায় সেসব পুষ্টি উপাদানগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদাগুলো পূরণ হয় এবং পুষ্টি ঘাটতি না থাকায় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে যায় ।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও জিং থাকে এবং পালং শাকের চেয়ে তিনগুণ বেশি আয়রন থাকে। যার ফলে আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা সহজে দূর করা যায়।

লিভার ভালো রাখে: সজনে পাতার অনেক ওষুধী গুণগুন রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের যকৃত এবং লিভারকে ভালো রাখতে অনেক সাহায্য করে । সজনে পাতার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকাই সজনে পাতা লিভারের কোষ গুলো সচল রাখে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সজনে পাতা হজমেও অনেক সাহায্য করে থাকে।

ওজন কমানো: সজনে পাতার মধ্যে অনেক পুষ্টি  উপাদান থাকাই এটি আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। সাজনা পাতা খাবার ফলে আমরা সহজে শরিরের মেদ এবং চর্বি কমিয়ে ফেলতে পারি। যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সজনা পাতা বা রস,সজনে ডাটা, সজনা পাতার গুড়া ও রাখতে পারেন।

হার্ট ভালো রাখে: সজনে পাতা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি কমিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে বিধায় হার্ট অ্যাটাক এবং হার্টের যে কোন সমস্যা সমাধান সহজেই করা যায।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: সজনে পাতা শরীরের শর্করার মাত্রা কে বাড়তে দেয় না ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন সাজনা পাতা খেলে ডায়াবেটিক্স নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সজনে রাখা উচিত।

উচ্চ রক্তচাপ: সজনে পাতায় অনেক ঔষধি গুন থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

বুকের দুধ বৃদ্ধি করে: সজনে পাতা বুকের দুধ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাচ্চা প্রসবের পর মায়েদের দুধ বৃদ্ধিতে কালোজিরা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেমনি এর পাশাপাশি সজনে পাতাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । নিয়মিত সজনে পাতা খেলে নতুন মায়েদের বুকের দুধ অনেক বৃদ্ধি পায়।

চোখের জ্যোতি বাড়াতে: সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকাই এটি চোখের জ্যোতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হাড় মজবুত করে: সজনে পাতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড় গঠনে এবং হাড় শক্ত করতে অত্যন্ত উপকারী। তাই নিয়মিত সজনে পাতা খেলে এর মধ্যে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় গঠন করতে এবং হাড় মজবুত করতে অনেক সাহায্য করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য: সজনে পাতা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হজমে সাহায্য করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ।

জন্ডিস, ডায়রিয়া, কলেরা: সজনে পাতা ডায়রিয়া ,কলেরা, আমাশয় ও জন্ডিসের মতো রোগ  নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা পালন করে। সজনে পাতার রস শরীরের জন্য অনেক উপকারী যার ফলে জন্ডিসের মতো সমস্যা ও সহজে দূর হয়ে যায় ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা: 

সজনে পাতার যেমন অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে তেমনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । কেননা এই পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন সাজনা পাতা পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ এছাড়াও বিজ্ঞানীরা বলেন যে সজনা পাতায় পটাশিয়াম ১২৫%,ম্যাগনেসিয়াম ৬১%,আমিষ ৪২%, ভিটামিন এ ২৭২ % ,ভিটামিন সি২২% ,সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া  ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতার উপকারিতা সমুহ

  • সজনে পাতা রক্তে থাকা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। সজনে পাতায় রয়েছে ক্লোরোজেনিক এসিড যা রক্তের শর্করার মাত্রার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে ।
  • সজনে পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনক্রিমেন্টরি থাকায় তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • সজনে পাতায় বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকায়তার রক্তের গ্লোকুজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ফলে ডায়াবেটিস সহজে নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে  এসকারবিক এসিড থাকে যা শরীরের ইনসুলিন এর মাত্রা কমিয়ে শর্করার পরিমান ঠিক রাখে। ফলে সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করা যায়।
  • একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৩০ জন মহিলার মধ্যে যে তিন মাস ধরে প্রতিদিন ১.৫ চা চামচ খালি পেটে সজনে পাতার রস  গ্রহণ করে তাহলে শর্করার মাত্রা ১৩.৫% কমে যায় ।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত সজনে রাখতে পারেন।

সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম:

সজনে পাতা অনেকে অনেক ভাবে খেয়ে থাকেন আবার অনেকে আছেন তা কিভাবে খেতে হয় জানেন না। কেউ কেউ আছেন যারা চায়ের সাথে মিশিয়ে খান আবার কেউ কেউ আছেন যারা এর পাউডার বানিয়ে পানিতে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন।সজনে পাতার ভর্তা বানিয়ে খাওয়া যায়, সজনে পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় তবে এর অনেক পুস্টিগুন থাকায় অনেকে অনেক ভাবেই খেয়ে থাকেন।

আরোপড়ুন :কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সমুহ

সজনে পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়, সজনে পাতা ভর্তা করে খাওয়া যায়, সজনে পাতা অন্যান্য সাগের সাথে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়। আবার কাঁচা সজনে পাতা বেটে এর সাথে আদা, রসুন, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ মিশিয়ে টেস্টি করে খেতে পারেন।

সজনে পাতা ভর্তা বানিয়ে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। সজনে পাতা রোদে শুকিয়ে এটাকে পিছে পাউডার বানানো হয় এই পাউডার চায়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায় আবার কেউ কেউ পানিতে মিশিয়ে সাথে মধু দিও খেয়ে থাকেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। শরীরে ব্যথা থাকলে ব্যথা দূর হয়ে যায় সাথে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সজনে পাতার পুষ্টিগুনাগুন:

সজনে পাতার অনেক পুস্টিগুনাগুন রয়েছে। এর বিপুল পরিমাণে রয়েছে খনিজ পদার্থ আর ভিটামিন,পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,জিংক, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এগুলো ছাড়া প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এর অনেক পুস্টিগুন থাকাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে তাই চলুন জেনে নেয়া যাক সজনে পাতারপুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে

  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমানে খনিজ পদার্থ,ভিটামিন,ও প্রোটিন রয়েছে যার কারনে সজনে পাতা মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • সজনে পাতায় অনেক পুষ্টিগুণ থাকাই এটি মানুষের শরীরে টেস্টটোস্টেরন হরমন বৃদ্ধি করে।
  • সজনে পাতা শরীরে ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে
  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা দাঁত ও হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।এটি হাড় ও দাত মজবুত করে।
  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এটি চোখের জন্য অনেক উপকারী। এটি দৃষ্টিশক্তি উজ্জ্বল রাখেতে সহায়তা করে।
  • সজনে পাতা পরিপাকতন্ত্রের অনেক সমস্যার সমাধান করে যেমন বুক জ্বলা পুড়া,পেট ফাপা,হজমে সমস্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক উপকার করে থাকেন।
  • সজনে পাতা খেলে সহজে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা সহজে দূর করা যায় ।
  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও ব্যাকটেরিয়াল যৌগ থাকে। যার কারণে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সংক্রমণ এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে
  • সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে দেয় না, ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে ।
  • সজনে পাতায় এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিদ্যমান। যার জন্য এটি যকৃত ও কিডনি সুস্থ রাখতে এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
  • সজনে পাতা শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসের মত রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
  • সজনে পাতায় প্রায় ৪৬ রকমের আন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকে যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী ।

সজনে পাতার অপকারিতা সমূহ:

সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটি রয়েছে। সজনে পাতায় অনেক পুষ্টিগুণ থাকাই এর উপকারিতা অনেক যা আমরা অনেকেই জানি আবার এর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতাও রয়েছে যা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা তাই এই সব বিষয়গুলো জেনে সজনে পাতা ব্যবহার করা উচিত। জেনে নেওয়া যাক সজনে পাতার অপকারিতা সমূহ:

  • সজনে পাতা বেশি পরিমাণে খেলে বমি বমি ভাব, পেটে সমস্যা ,খুদা মন্দা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের সাজনা পাতা পরিমাণ মতো খেতে হবে যাতে আমাদের পেটে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।
  • সজনে পাতা গুড়া  বা রস নিয়মিত খাওয়ার পাশাপাশি ব্লাড প্রেসারের ওষুধ খেতে থাকলে ব্লাড প্রেসার অনেক অংশ কমে যায় ফলে শরীরে অনেক ক্ষতি হয় ।
  • গর্ভাবস্থায় সজনে পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কেননা সজনে পাতা  বা পাতা সংলগ্ন ডালে অনেক বিষাক্ত উপাদান থাকে যা গর্ভাবস্থায় শরীরে প্রবেশ করলে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • ডায়াবেটিস রোগীরা মনে করেন সজনে পাতা খেলে রক্তের সুগার ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু আসলে তা নয় ডায়াবেটিস রোগীরা ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি সজনে পাতার জুস,গুড়া খেলে অনেক উপকার পাবেন।
  • কিডনিজনিত সমস্যা বা হাইপোথাইরয়েড আক্রান্ত ব্যক্তিরা শুধু সাজনি পাতার উপর নির্ভর করবেন না এর পাশাপাশি ওষুধ খাবেন তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে

সজনে ডাটার উপকারিতা: 

  • সজনে ডাটায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে সজনে ডাটা জ্বর কাশি সর্দি উপশম করতে সাহায্য করে।
  • সজনে ডাটা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে ফরে উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য সজনে ডাটা অনেক উপকারী। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা খাদ্য তালিকা সজনে রাখতে পারেন।
  • সজনে পাতা হজমে সহায়তা করে থাকে। তাই যাদের পেটে সমস্যা রয়েছে তারা বেশি বেশি সজনে পাতা, সজনে ডাটার  তরকারি খেতে পারেন।
  • সজনে ডাঁটা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে থাকে তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা খাদ্য তালিকায় সজনে রাখতে পারেন।
  • সজনে ডাটাই প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ,আয়রন, ভিটামিন সি রয়েছে আমাদের হাড় গঠনে সাহায্য করে এবং হাড়কে শক্ত মজবুত করে।
  • বসন্ত রোগ সারাতেও সজনে ডাঁটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সজনে ডাটার তরকারি নিয়মিত খেলে বসন্ত রোগ সহজেই সেরে যায়।
  • সজনে পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা এলার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকেন এবং এলার্জির কারণে যে শ্বাসকষ্ট হয় তা দুর করতেও সজনে ডাটা উপকারী ভূমিকা পালন করে।
  • সজনে ডাটাই প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকাই সজনে ডাটা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে সহায়তা করে তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আছে তারা নিয়মিত তরকারি খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন।

সজনে ডাটা যেহেতু হজমে সহায়তা করে পেট ক্লিয়ার রাখেন তাই এটি লিভার ও কিডনি সুরক্ষিত রাখতে ও সহায়তা করে এইজন্য সজনে ডাটা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়া উপকারিতা:

গর্ভবস্থায় সজনে  ডাটা অনেক উপকারী । সজনে ডাটাই প্রচুর পরিমাণে আয়রন,পটাশিয়াম, ভিটামিন ও ক্যালসিযাম থাকে এগুলো আমাদের শরীরের রক্ত বিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে, শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা  খাওয়া অনেক উপকারী ।তাই গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকায় সজনে ডাটা রাখা উচিত তাহলে ভিটামিনের চাহিদা অনেকটাই পূরন হয়ে যাবে ।

আরোপড়ুন : চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

  • গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খেলে গর্ভবতী মায়েদের ফলিক এসিডের চাহিদা পূরণ করে থাকে। ফলে পেটে থাকা সন্তান পর্যাপ্ত ফলিক এসিড এর চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। তাই সন্তান সুস্থ ও সবল হয়।
  • অনেক সময় গর্ভবতী মায়েদের রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এই রক্তশূন্যতা পূরণ করার জন্য নিয়মিত সজনে ডাটা খেতে পারেন। কেননা সজনে ডাটা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যার রক্তশূন্যতা পূরণ করতে সহায়তা করে।
  • সজনে ডাটাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে। গর্ভাবস্থায় পটাশিয়ামের অভাব হলে পা ফুলে যাওয়া, পায়ে টান ধরা, খিচুনি, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এমনকি অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাই নিয়মিত সজনে ডাটা খেলে এসব সমস্যা গুলো দূর করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

উপসংহার:

সজনে পাতায় অনেক পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে যার জন্য সজনে পাতার উপকারিতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা, গর্ভাবস্থায় সজনে পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সজনে পাতার পুষ্টিগুনাগুন যারা পেতে চান তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সজনে পাতা, সজনে ডাটা, সজনে পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা রাখতে পারেন। এতে শরীরের অনেক উপকার হবে।

আশা করি সজনে পাতা পুষ্টিগুনাগুন এবং উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পোস্টটি ভালোভাবে পড়েছেন। এরকম পোস্ট আরো পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।


 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রয়েল; আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url